হত্যা-গুম বিষয়ে ২০ দেশের উদ্বেগ, তালেবানের প্রত্যাখ্যান

আফগানিস্তানে হত্যা ও গুম বিষয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য ২০টি দেশের সরকার। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করে। তবে তালেবান সরকার এমন প্রতিবেদন পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) বৈঠক

নভেম্বরের শেষের দিকে এইচআরডব্লিউ একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, আফগানিস্তানে আশরাফ ঘানি সরকারের পতনের পর থেকে তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে কান্দাহার, হেলমান্দ, গজনি ও কুন্দুজের চারটি প্রদেশে আগের সরকারের নিরাপত্তাবাহিনীর শতাধিক সদস্য নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সহযোগী এশিয়া পরিচালক প্যাট্রিসিয়া গসম্যান বলেন, তালেবান নেতৃত্বের প্রতিশ্রুত সাধারণ ক্ষমা স্থানীয় কমান্ডারদের আফগান নিরাপত্তাবাহিনীর সাবেক সদস্যদের হত্যা-গুম থেকে বাঁচাতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে আরও হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে, দায়ীদের জবাবদিহি করতে এবং নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দায়িত্ব তালেবানেরই।

ইনামুল্লাহ সামাঙ্গানি

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, উত্তর মেসিডোনিয়া, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, ইউক্রেন ও ইউরোপিয় ইউনিয়ন।

বিবৃতিতে তারা জানায়, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক সদস্যদের কথিত হত্যা ও নিখোঁজের বিষয়ে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে তারা উদ্বিগ্ন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তালেবানের ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার পরিপন্থী। নিরাপত্তাবাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা কার্যকর করতে ইসলামিক আমিরাতের প্রতি আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।

ইসলামিক আমিরাত এই ইস্যুতে বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাবেক নিরাপত্তাবাহিনীর লোকজনকে হত্যার অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই এবং ইসলামী আমিরাত এক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

ইসলামিক আমিরাতের ডেপুটি মুখপাত্র ইনামুল্লাহ সামাঙ্গানি বলেন, আমরা সাবেক প্রশাসনিক নিরাপত্তাবাহিনীর হত্যার দাবি প্রত্যাখ্যান করি। এর কোনো সত্যতা বা প্রমাণ নেই।। এ সময় তিনি মন্তব্য করেন, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে যারা আছেন তাদের উচিত দায়িত্বের সাথে কথা বলা এবং প্রমাণ দেয়া। গুজব ও প্রোপাগান্ডার ভিত্তিতে কোনো দাবি করা উচিত নয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইদ খোস্তি বলেন, আমরা প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করি। যদি তাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ থাকে, তাহলে আমাদের সাথে শেয়ার করার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে আমরা অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারি।