এবার ব্রিটিশ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় চীন

যুক্তরাজ্যের একটি স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছে, চীন জিনজিয়াংয়ে উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দোষী। ব্রিটিশ ব্যারিস্টার স্যার জিওফ্রে নিসের নেতৃত্বে উইঘুর ট্রাইব্যুনাল চীনকে জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ, যৌন সহিংসতা, দাসত্ব, নির্যাতন এবং জোরপূর্বক স্থানান্তরের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় প্রকাশ করেছে ট্রাইব্যুনাল।

চীনের উইঘুর মুসলমান

এর আগে চলতি বছরের অক্টোবরে ৪৩টি দেশ চীনকে উইঘুর সম্প্রদায়ের জন্য আইনের শাসনের প্রতি পূর্ণ সম্মান নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়। এছাড়া একটি বিবৃতি জাতিসংঘে পাঠ করা হয়। এতে বেইজিং ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। এছাড়া সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় বেইজিং অলিম্পিক বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। উইঘুর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র হাউস অব রিপ্রেজেনটিটিভসে একটি আইনও পাস করা হয়েছে। এরপর যুক্তরাজ্যভিত্তিক ট্রাইব্যুনালের এই রায় এল।

ট্রাইব্যুনাল চীনের বিরুদ্ধে ওঠা ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ’-এর অভিযোগগুলো বিবেচনা করেছে। যেখানে বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছেন, জিনজিয়াংয়ে ইসলাম ধর্ম পালনকারীদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউনে এক মিলিয়নেরও বেশি মুসলমানকে বন্দী করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্য ও চীনের পতাকা

রায়ে বলা হয়েছে, জনসমক্ষে শোনা প্রমাণের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল যুক্তিসঙ্গতভাবে বিশ্বাস করে, চীন জিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে জন্মরোধের ব্যবস্থা আরোপ করেছে ও গণহত্যা করেছে।

খবরে বলা হচ্ছে, ট্রাইব্যুনাল ৭০ জন উইঘুর সাক্ষীর কাছ থেকে শুনেছে। বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক বন্দিসহ লন্ডনে গত জুন এবং সেপ্টেম্বরে দুই দফা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষীরা জানিয়েছেন, মামলাটি সরকার বা জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দ্বারা মোকাবেলা করা বেশি উপযুক্ত, কারণ তাদের নিজেদের এমন কিছু করার সাহস নেই। বিশেষ করে প্রতিপক্ষ যখন চীনের মতো একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র।

ট্রাইব্যুনালের ‌‘গ্রাউন্ডব্রেকিং’ রিপোর্টের পর ব্রিটেনের কনজারভেটিভ এমপি নুস ঘানি বিবিসিকে বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনের গণহত্যা চালানোর প্রমাণ উঠে এসেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় লন্ডনে চীনা দূতাবাস গত অক্টোবরে জানায়, ট্রাইব্যুনাল ‘জনগণকে প্রতারিত ও বিভ্রান্ত করার জন্য মুষ্টিমেয় কিছু চীনবিরোধী শক্তি’ ব্যবহার করেছে।