ইরানে ইসরায়েলি হামলার ‘ব্যাপক প্রস্তুতি’ ফাঁস!

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, এই যুদ্ধ কেবল পারমাণবিক স্থাপনাকেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ থাকবে না। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নতুন পরিকল্পনার আওতায় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে ইসরায়েল। ইসরায়েল হাইওমের বরাত দিয়ে খবরটি দিয়েছে ইসরায়েল ন্যাশনাল নিউজ।

ইরানে হামলার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ইসরায়েল

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ইসরায়েল আংশিকভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু এ বছর পরিকল্পনাগুলো নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই যুদ্ধ শুরু হতে ৩-৫ বছর সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।

ইতোমধ্যে তারা এমন কিছু প্রশিক্ষণ নিচ্ছে যা ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিসরকে প্রসারিত করবে। ইরানের সাথে ভবিষ্যত সংঘর্ষের প্রস্তুতির জন্য ইসরায়েল প্রতিরক্ষামূলক এবং আক্রমণাত্মক অস্ত্রাগারের পরিধি বাড়াতে চাচ্ছে।

প্রতিবেদনটি বলছে, ইরানে সম্ভাব্য ভবিষ্যত হামলার প্রস্তুতি তিনটি প্রধান পর্যায়ে বিভক্ত। হামলার পূর্বের পর্যায়, আক্রমণের সময় এবং আক্রমণের পরের পরিস্থিতি। প্রাথমিক পর্যায়ে আইডিএফ শুধু অপারেশন পরিকল্পনাই করবে না, আক্রমণের মডেল নিয়ে প্রশিক্ষণও চালাবে। সমস্ত ফ্রন্টে সম্ভাব্য সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

একই সময়ে হামলার আন্তর্জাতিক বৈধতা তৈরি করতে ইসরায়েল দ্রুত কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ইসরায়েলের এই পরিকল্পনার সাথে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইসরায়েল হেয়োমকে বলেছেন, আমেরিকানদের সাথে সমন্বয় কৌশলগত, এটি আমাদের স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দুতে। আমরা আক্রমণের সময় তাদের খুব কমই ব্যবহার করতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, তাদের গোয়েন্দা তথ্য বা রাডার ইরাক এবং উপসাগরীয় অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। স্পষ্টতই আক্রমণের পরে আমাদের জন্য সামরিক সুরক্ষায় সহায়তা করার জন্য তা ব্যবহার করা হবে।

ইসরায়েল নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে ইরানে আক্রমণ করবে। প্রাথমিকভাবে আক্রমণটি সীমিত বা বিস্তৃত হতে পারে। এর আওতায় প্রথমে থাকবে ফোরডো এবং নাতাঞ্জের পারমাণবিক কর্মসূচি। এমনকি বিপ্লবী গার্ডের অন্তর্গত সাইটগুলোও হামলার টার্গেটভুক্ত করা হচ্ছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে ইসরায়েল প্রথমে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আক্রমণ করবে, যাতে ইরানি বিমানবাহিনীর ঝুঁকি কমানো যায়।

একজন সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইসরায়েল হেয়োমকে বলেছেন, আমাদের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি যদি এক বা দুই বছর পিছিয়ে যায়, তাহলে কোনো কাজ হল না। আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন করব এবং তা যেন বহু বছরের জন্য পিছিয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান পাল্টা আক্রমণে তার সমস্ত ক্ষমতা এবং সংযোগ ব্যবহার করবে। তবে ইসরায়েল মনে করে এ কাজটি করবে হিজবুল্লাহ, যারা ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। ইসরায়েলের আক্রমণের পরই ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের ঘোষণাও দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।