ক্রাইস্টচার্চ হামলা: মুসল্লিদের বাঁচানোয় ১০ জনকে সম্মাননা

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলা হয়েছিল ২০১৯ সালে। সে সময় নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হামলাকারীকে ঠেকানো ১০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে দেশটি। সর্বোচ্চ পুরস্কার নিউজিল্যান্ড ক্রসসহ মোট তিনটি পুরস্কার দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার এসব পুরস্কারের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।

ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদ

২০১৯ সালের ১৫ মার্চ, অস্ট্রেলিয়ান শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী ব্রেন্টন ট্যারান্ট নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আল নুর মসজিদ এবং লিনউড ইসলামিক সেন্টারে হামলা চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যা করেন। এ সময় আরো ৪০ জন আহত হয়েছিলেন। গত বছর তাকে প্যারোলের সম্ভাবনা ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। দ্বীপ দেশটিতে প্রথমবারের মতো এমন রায় দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে জেসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, এই ব্যক্তিরা যে সাহস দেখিয়েছিলেন তা ছিল নিঃস্বার্থ ও অসাধারণ। সেদিনের কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। তারা প্রত্যেকে অন্যদের বাঁচানোর জন্য জীবনকে মৃত্যুঝুঁকিতে রেখেছিল। তারা এভাবে হামলাকারীকে না ঠেকালে জীবনের ক্ষতি আরও বেশি হতে পারত। আরো বেশি হতাহতের আশঙ্কা ছিল।

জেসিন্ডা আরডার্ন

পুরস্কারপ্রাপ্ত দশজনের মধ্যে দুজনকে দেয়া হয় দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘দ্য নিউজিল্যান্ড ক্রস’। ড. নাঈম রশিদ ও আবদুল আজিজকে এ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। ডা. নাঈম রশিদ নিজের নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে আল নূর মসজিদে বন্দুকধারীকে চ্যালেঞ্জ করে মৃত্যুকে বরণ করেছেন। আবদুল আজিজও বন্দুকধারীকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। এর ফলে ব্রেন্টন ট্যারান্ট লিনউড ইসলামিক সেন্টারে পুনরায় প্রবেশ করতে পারেননি।

পরবর্তী সম্মাননা দ্য নিউজিল্যান্ড ব্রেভারি ডেকোরেশন দেয়া হয় চারজনকে। সিনিয়র কনস্টেবল স্কট কারমোডি ও জিম ম্যানিং বন্দুকধারীকে ধরার ক্ষেত্রে নিজেদের ঝুঁকির কথা ভাবেননি। এছাড়া জিয়াদ শাহ অন্য এক মুসল্লিকে নিজের দেহ দিয়ে আড়াল করে হামলাকারীর হাত থেরে রক্ষা করেন। লিয়াম বিয়েল নামের এক ব্যক্তি আল নূর মসজিদের পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় গুলির শব্দ এবং চিৎকার শুনে অন্যদের মসজিদে যাওয়া থেকে বিরত রাখেন এবং পরে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করেন। এ চারজনকে দেয়া হয় দ্য নিউজিল্যান্ড ব্রেভারি ডেকোরেশন সম্মাননা।

এছাড়া দ্য নিউজিল্যান্ড ব্রেবারি মেডেল বা সাহসিকতা পদক দেয়া হয় চারজনকে। এরা হলেন- ল্যান্স ব্র্যাডফোর্ড, ওয়েন ম্যালে, মার্ক মিলার ও মাইক রবিনসন। তারাও সাহসিকতার সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে অন্যদের সহায়তা করেছিলেন এবং তাদের নিরাপদ জায়গা সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, ওইদিনের ঘটনায় সাহসী পুরস্কারপ্রাপ্তরা নিঃস্বার্থ ও অসামান্য।