ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

আজ ৪ জানুয়ারি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতির পিতা শেখ বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান উপমহাদেশের বৃহৎ এ ছাত্র সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে সংগঠনটির নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামে কার্যক্রম শুরু করে এটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভাষা আন্দোলন ও মহান স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছে ঐতিহ্যবাহী এ ছাত্র সংগঠনটি।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের লোগো

প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনে নামেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, এগারো দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী এ সংগঠনের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয় ও গৌরবোজ্জ্বল।

ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরে জাতীয় রাজনীতিতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন, এখনও দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান জাতীয় রাজনীতির অনেক শীর্ষ নেতার রাজনীতিতে হাতেখড়িও হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন হিসেবে কাজ করছে ছাত্রলীগ। তবে টানা দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকাকালে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

এদিকে, ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ৫ দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— আজ মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারি, সকাল সাড়ে ৭টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। এ ছাড়া ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি সকাল ৮টায় এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্রতিনিধি দল টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, ঢাবি, কার্জন হলে সকাল ৯টায় কেক কাটা এবং দুপুর ২টায় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন ও আনন্দ শোভাযাত্রা।

আগামীকাল বুধবার, ৫ জানুয়ারি, বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, কেআইবি, মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হবেন আওয়ামী লীগের দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর ও উপজেলা ইউনিটগুলোর দলীয় কার্যালয়ে তার ভাষণ সম্প্রচার করা হবে।

আগামী ৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাবির টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে পথশিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করবে সংগঠনটি। একই দিন বিকেল ৩টায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে। দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে আগামী ৭ জানুয়ারি বিকেল ৩টায়। সবশেষ আগামী ৮ জানুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাবির অপরাজেয় বাংলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করতে সকল ইউনিটের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন।