পুলিশের চেষ্টায় চাকরি পেলেন সেই যুবক

সম্প্রতি ‘ভাতের বিনিময়ে’ পড়াতে চাওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হন মোহাম্মদ আলমগীর কবির নামের এক যুবক। তার জন্য এবার স্বপ্ন আউটলেটে চাকরির ব্যবস্থা করেছেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার, এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। এ তথ্য তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আলমগীর কবির, বুধবারের ছবি

জানা যায়, এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্তীর প্রচেষ্টায় শপিংমল পুলিশ প্লাজা বগুড়া ব্রাঞ্চে রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট পদে আলমগীর কবিরকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। স্বপ্ন পরিচালক সামসুদ্দোহা শিমুল বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারি, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ওই যুবকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন।

এর আগে গতকাল বুধবার আলমগীর কবিরকে বগুড়ায় চাকরি দেওয়া হবে জানিয়ে এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, বিজ্ঞাপনের সত্যতা যাচাইয়ে দেখা গেছে, তার আসলেই চাকরি প্রয়োজন। তবে এ ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হীন মানসিকতার পরিচায়ক, সেটিও বুঝিয়ে বলা হয়েছে তাকে।

তার আগে দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আলমগীর কবির। ওই সময় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন বিষয়ে তার সঙ্গে আলাপ করেন এসপি সুদীপ।

এর আগে বগুড়া সদর সার্কেলের এডিশনাল এসপি সরাফাত ইসলাম জানিয়েছিলেন, বিজ্ঞাপন নজরে আসলে আলমগীর কবিরের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার শুরু করে পুলিশ। মানবিক দিক বিবেচনা করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

সম্প্রতি বগুড়ার জহুরুলনগরে প্রথম-দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত গণিত ছাড়া সকল বিষয়ে পড়ানোর জন্য বিজ্ঞাপন দেন আলমগীর কবির। শহরজুড়ে প্রিন্ট করা বিজ্ঞাপনটি অনেকের চোখে পড়ে। এরপর কেউ একজন তা ফেসবুকে আপলোড করলে ভাইরাল হয়।

জানা যায়, ৩২ বছর বয়সী আলমগীর কবির রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে। তার বাবা মো. কফিল উদ্দিন একজন পল্লী চিকিৎসক এবং মা আম্বিয়া বেগম গৃহিনী। তাদের ৫ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট আলমগীর কবির। বড় ছেলে রুহুল আমিন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। বাকি তিন মেয়ে রুপালী, নূরজাহান ও সুরাইয়া।

ভাইরাল হওয়া নিজের সেই বিজ্ঞাপনের বিষয়ে আলমগীর কবির বলেন, বর্তমানে একটি টিউশনি রয়েছে। সেখান থেকে ১৫০০ হাজার টাকা পান। এটা দিয়ে তার খাওয়া খরচটা চলে যায়।

কিন্তু আলমগীর কবিরের প্রশ্ন— চাকরির পরীক্ষা দিতে যখন ঢাকায় যাওয়া লাগে তখন টাকা কোথায় পাই? কারণ একবার ঢাকায় গেলে আমার টিউশনির টাকা শেষ, তখন সারা মাসে আমি খাব কী?

তাই ভেবেছিলাম, টিউশনির বিনিময়ে দুই বা তিন বেলা যদি ভাতের ব্যবস্থা হয়, তাহলে আমি নিশ্চিন্তে পরীক্ষা দিতে ঢাকায় যেতে পারব। আর এমন চিন্তা থেকে ওই বিজ্ঞাপনটি দিয়েছিলাম, বলেন ভাইরাল হওয়া এই যুবক।