কয়েক কোটি মানুষের জন্ম নিবন্ধনের তথ্য উধাও!
- Details
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
নাগরিক কর্মকাণ্ডের প্রায় প্রতি ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়ছে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডির। যাদের এনআইডি নেই, তাদের ক্ষেত্রে দরকার হচ্ছে জন্ম নিবন্ধনের। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, আগে বিশেষ করে ১০ বছর আগে যেসব জন্ম নিবন্ধন করা হয়েছিল সেগুলোর প্রমাণ হিসেবে হাতে কাগজ থাকলেও সার্ভারে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না! সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সার্ভারের গোলযোগে এসব তথ্য মিসিং হয়ে গেছে। সবাইকে আবার নতুন করে জন্ম নিবন্ধন করতে হবে।
জানা গেছে, এই অঞ্চলে জন্ম নিবন্ধনের ধারণা এসেছিল অনেক আগে, ১৮৭৩ সালে। কিন্তু ব্রিটিশ আমলসহ পাকিস্তান ও পরে বাংলাদেশ আমলেও এর প্রচলন খুব একটা ছিল না। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ সরকার জন্ম নিবন্ধন বিষয়ে আইন করে। ২০০৬ সাল থেকে এটি কার্যকর করা হয়। এই আইনের আওতায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী-লিঙ্গ নির্বিশেষে জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে সবাইকে জন্ম নিবন্ধনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।
এনআইডি না থাকায় সে সময় ১৮টি কাজের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়। একই সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে কাজ শুরু হয়। এর আগে অনেকে নিজ উদ্যোগে পাসপোর্ট করাসহ কয়েকটি কাজের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন থেকে জন্ম সনদ নিতো।
সম্প্রতি দেশে স্কুলে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণিতে পিইসি পরীক্ষার সময়ও জন্ম সনদ দিতে হয়। শিক্ষার্থীদের টিকার ক্ষেত্রে সুরক্ষা অ্যাপে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্যও জন্মসনদ বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেখানে জন্মসনদ দিতে গিয়ে অনেক অভিভাবক দেখতে পান, ২০১১ সালের আগে নেয়া জন্মসনদ জাতীয় সার্ভারে নেই।
মূলত ২০১১ সালের শেষদিক থেকে আগে নেয়া জন্ম সনদগুলোর তথ্য অনলাইনে এন্ট্রি করা শুরু হয়। ২০১৩ সালে সরকার এ বিষয়ক আইন সংশোধন করে। আইনমতে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্ব দেয়া হয় রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়কে। তারা কাজ শুরু করে ২০১৬ সাল থেকে।
এর মধ্যেই ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের নতুন ওয়েবসাইট ও সার্ভার চালু করা হয়, যা ২০১২ সালে কার্যক্রম শুরু করে। সে সময় গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পুরোনো নিবন্ধিতদের জন্মনিবন্ধন সনদ নতুন ওয়েবসাইটে যুক্ত করে নেওয়ার কথা বলা হলেও সেটা তেমন কার্যকর হয়নি। ফলে জনগণের অসচেতনতা আর নিবন্ধন কার্যালয়গুলোর অবহেলায় কোটি কোটি জন্মনিবন্ধন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বাতিল হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কর্মকর্তারা বলেন, ২০১১ সালের পর থেকে সব জন্ম নিবন্ধন অনলাইনেই হচ্ছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আগের তথ্যগুলো অনলাইনে আপলোড করার সুযোগ ছিলো। এরপর যেসব নতুন সার্ভার আসে, সেগুলোতে পুরনো তথ্য আপলোড করার সুযোগ না থাকায় ২০১১ সালের আগে করা কোটি কোটি নিবন্ধন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই উধাও হয়ে যায়।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ফখরুদ্দিন মোবারক বলেছেন ২০১০ সাল পর্যন্ত বহু মানুষের জন্ম সনদের তথ্য অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে। তবে অনেকেরটাই শেষ করা যায়নি। তবে এখনকার সার্ভারে পুরনোটা আর দেয়া যাবে না। তাই যাদেরগুলো বাদ পড়েছে তাদের নতুন করেই জন্মনিবন্ধন করতে হবে।
বাংলাদেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে জন্ম নিবন্ধন করে সনদ নিয়েছেন এমন কয়েক কোটি মানুষকে এখন সম্পূর্ণ নতুন করে অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করাতে হবে, কারণ তাদের আগের নিবন্ধন গায়েব হয়ে গেছে। কর্মকর্তাদের ধারণা, কমপক্ষে ৫ কোটি জন্মনিবন্ধন একেবারেই গায়েব হয়ে গেছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.