ইসলামকে ফরাসি রূপ দিতে চাচ্ছেন ম্যাক্রোন!

ফরাসি সরকার আজ শনিবার ফ্রান্সে ইসলামকে পুনর্নির্মাণ এবং চরমপন্থা থেকে মুক্ত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ‘ফোরাম অব ইসলাম’ নামে একটি সংস্থা চালু করেছে। ইউরোপে মুসলিম সম্প্রদায়, পাদ্রী, সাধারণ মানুষ ও নারীদের একক নেতৃত্বে সহায়তা করার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এপি।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোন

সমালোচকরা বলছেন, আগামী এপ্রিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডানপন্থী ভোটারদের কাছে টানতে ইমানুয়েল ম্যাক্রোন নতুন পন্থা অবলম্বন করছেন। কেউ কেউ এটিকে মধ্যপন্থী দলকে প্রলুব্ধ করার রাজনৈতিক চক্রান্ত হিসাবেও দেখছেন। এর আগে উইঘুর সংকট ঘিরে ইসলামের চীনা রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল চীন সরকার।

খবরে বলা হচ্ছে, অতীতে ইসলামিক চরমপন্থী হামলায় ফ্রান্স রক্তাক্ত হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে সিরিয়ায় শত শত নাগরিক জিহাদিদের সাথে যুদ্ধ করতে গেছে। হাজার হাজার ফরাসি সৈন্য এখন আফ্রিকায় ইসলামিক চরমপন্থীদের সাথে লড়াই করছে। মৌলবাদ একটি বিপদ, এটি অধিকাংশ লোকই বিশ্বাস করে ইউরোপে।

ফ্রান্সের একটি মসজিদ

আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নতুন সংস্থাটি চালু করেছে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সমর্থকরা বলছেন, এটি দেশটির ৫ মিলিয়ন মুসলমানকে নিরাপদ এবং বিদেশী প্রভাব থেকে মুক্ত রাখবে। এছাড়া সংস্থাটি নিশ্চিত করবে যে, ফ্রান্সে মুসলিম অনুশীলনগুলো জনজীবনে ধর্মনিরপেক্ষতার লালিত মূল্যকে মেনে চলে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, অনেক মুসলিম যারা ধর্মকে তাদের ফরাসি পরিচয়ের একটি অংশ বলে মনে করে, তারা সরকারের উদ্যোগটিকে প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য প্রক্রিয়ার আরেকটি পদক্ষেপ হিসেবে মনে করছেন।

নতুন কমিটিতে ইমাম, সুশীল সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী এবং ব্যবসায়ী নেতারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। ফরাসি মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, এর সমস্ত সদস্য সরকার বাছাই করেছে। কমিটির সদস্যদের চার ভাগের এক ভাগ থাকবেন নারী।

‘ফোরাম অব ইসলাম’ মূলত ফরাসি কাউন্সিল অফ মুসলিম ফেইথের মতো আরেকটি সংস্থা হতে যাচ্ছে। ২০০৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি কাউন্সিলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেটি সরকার এবং ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে সংলাপের কাজ অব্যাহত রেখেছিল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিনের মতে, আমরা ইসলামের ওপর বিদেশি প্রভাবের অবসান ঘটিয়ে একটি বিপ্লব শুরু করতে চাই। ইসলাম ফ্রান্সে বিদেশি কোনো ধর্ম নয়। এটি একটি ফরাসী ধর্ম যাতে বৈদেশিক কর্তৃপক্ষের কোনো প্রভাব থাকবে না। কোনো অর্থায়নও বিদেশ থেকে হতে পারবে না।