‘ঘুষ মন্দিরের প্রসাদ, দিলে না করতে নেই’

ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েও কোনো অনুতাপ দেখা যায়নি এক সরকারি কর্মকর্তার চোখেমুখে। দিব্যি হাসিমুখে জানিয়ে দিলেন, ঘুষ মন্দিরের প্রসাদ। কেউ দিলে তা নিষেধ করতে নেই। ভারতের রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরের একটি সরকারি অফিসের কর্মকর্তার এমন মন্তব্যে হতবাক হয়ে পড়ে সবাই।

মমতা যাদব

জানা গেছে, অনেক দিন ধরেই রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার কাছে খবর আসছিল, জয়পুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অফিসে প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন বড়-ছোট সব পদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। খবর পেয়ে ওই অফিসে অভিযান চালান দুর্নীতি দমন শাখার কর্মকর্তারা।

কৌশলে ঘুষচক্রের বড় একটি সিন্ডিকেটের পর্দা ফাঁস করেন তারা। অভিযানে এক কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মমতা যাদব নামের এক কর্মকর্তা ধরা পড়েন একেবারে হাতেনাতে। ধরা পড়েই সহাস্যে তিনি বলেন, ঘুষ মন্দিরের প্রসাদ। কেউ দিলে তা না করতে নেই।

ঘুষ, ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন শাখার এক কর্মকর্তা জানান, জয়পুরের সিদ্ধার্থনগরের এক বাসিন্দা অভিযোগ জানান, তারা দুই বন্ধু জমির কাগজপত্র নেওয়ার জন্য জয়পুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অফিসে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের বলা হয়, কাগজপত্র পেতে চাইলে অফিসার মমতাকে ছয় লক্ষ টাকা এবং ইঞ্জিনিয়ার শ্যাম মালুকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে। দুই বন্ধু বিষয়টি পৌঁছে দেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বজরং সিংহের কাছে। তার পর থেকেই তিনি একটি দল গঠন করে ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অফিসে নজরদারি চালাচ্ছিলেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী জমির কাগজপত্র নিতে টাকা নিয়ে ওই অফিসে হাজির হয়েছিলেন অভিযোগকারী ব্যক্তি। তার সঙ্গে সাধারণ পোশাকে ছিলেন দুর্নীতি দমন শাখার কর্মকর্তারা। সে সময় অফিসের বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার শ্যাম মালু। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিতেই তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলা হয়। তাকে জেরা করে ধরা হয় আরো তিন কর্মীকে।

সবশেষে গ্রেপ্তার করা হয় মমতা যাদবকে। ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন তিনিও। এ সময়ই তিনি অভিযান পরিচালনাকারী দলকে ঘুষ সম্পর্কে মন্তব্যটি করেন। মমতার ওই কক্ষ থেকে নগদ এক লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান দুর্নীতি দমন শাখার কর্মকর্তারা।