মূল কাজটা আগেই সেরে ফেলেছেন বোলাররা। পরে ব্যাটাররা যেন জয়ের আনুষ্ঠানিকতাই সারলেন। প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদেরই মাঠে সিরিজ হারিয়ে (২-১) বাংলাদেশ গড়ল ইতিহাস। প্রথম ওয়ানডেতে ৩৮ রানে জয়ের পর আজ তামিম ইকবালের দল জিতল নয় উইকেটের বিরাট ব্যবধানে।

taskin ahmed celebrates his five wicketবাংলাদেশের অবিশ্বাস্য সিরিজ জয়

বাংলাদেশের দুটো জয়ই এলো সেঞ্চুরিয়ন থেকে। মাঝখানে জোহানেসবার্গে দ্বিতীয় ওয়ানডেটা হারতে হয়েছিল সাত উইকেটে। প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে দলকে জিতিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সেই ম্যাচে দলীয় পারফরম্যান্সেরই সুফল মিলেছে। আজকের জয়ের একক নায়ক তাসকিন আহমেদ। বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তো প্রায় একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন তিনি!

তাসকিনের পাঁচ উইকেট তথা আগুনে বোলিংয়ের সুবাদে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ইনিংসের ১৩ ওভার বাকি থাকতেই ১৫৪ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সংস্করণে টাইগারদের বিপক্ষে এটাই সর্বনিম্ন সংগ্রহ প্রোটিয়াদের। তবে সেঞ্চুরিয়নে এটা তাদের তৃতীয় সর্বনিম্ন। মামুলি লক্ষ্যে টাইগাররা পৌঁছে গেছে হেসেখেলেই। ২৬.৩ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দল।

tamim liton pair bd win seriesবাংলাদেশের অবিশ্বাস্য সিরিজ জয়

দুই ওপনোর তামিম ও লিটন দাসের ব্যাটের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ তুলে নেয় ইতিহাস গড়া জয়। তবে ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো ১০ উইকেটে জয়ের হাতছানি ছিল। সেটা হাতছাড়া হয়ে গেল লিটন আউট হওয়াতে। ৫৭ বলে আট চারে ৪৮ রানে বিদায় নেন ডানহাতি ওপেনার। কেশব মহারাজের বলে বাভুমার হাতে ক্যাচ তুলে দেন লিটন।

তবে ম্যাচটা শেষ করেই এসেছেন তামিম। তামিমের ইনিংস দেখে যে কারোর আক্ষেপ হতে পারে। ইস, দক্ষিণ আফ্রিকা যদি আর কিছু রান করতো! বাংলাদেশ অধিনায়ক ৮২ বলে অপরাজিত থাকলেন ৮৭ রানে। ইনিংস সাজান ১৪টি চারে। যার সঙ্গে তামিমের বৈরিতা নিয়ে এত গুঞ্জন সেই সাকিবকে নিয়েই ম্যাচটা শেষ করেছেন তিনি। সাকিব ২০ বলে দুই চারে ১৮ রানে অজেয় থাকেন।

taskin took five wicketsবাংলাদেশের অবিশ্বাস্য সিরিজ জয়

ওয়ানডে সংস্করণে তামিমের নেতৃত্বে এটা বাংলাদেশের চতুর্থ সিরিজ জয়। তবে বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় হলেও দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এনিয়ে শেষ চার ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে দল। তবে এই জয়টার মহাত্ম্য অনেক। কখনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয় না পাওয়া বাংলাদেশ এই সফরেই জিতল দুবার।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটাই অবশ্য সবচেয়ে বড় জয় নয় বাংলাদেশের। ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে প্রোটিয়াদের ১৭০ রানে অলআউট করার পর একই ব্যবধানে জিতেছিল টাইগাররা। চট্টগ্রামের সেই ফলটার যেন পুনরাবৃত্তি হলো সেঞ্চুরিয়নে। এর আগে ২০০৬ সালে খুলনায় ৯ উইকেটে জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়াকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

এই সফরে প্রথম ওয়ানডেতে তামিমরা জেতেন ৩৮ রানে। ফিরতি ম্যাচে সাত উইকেটের জয়ে ফিরে আসে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ওয়ানডে রূপ নেয় অলিখিত ফাইনালে। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুদ্রা নিক্ষেপের লড়াইয়ে হেরে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম। ভাগ্য নিজেদের অনুকূলে পেয়ে সতীর্থদের হাতে ব্যাট তুলে দেন প্রোটিয়া দলপতি টেম্বা বাভুমা।

ব্যাট হাতে তাদের শুরুটা অবশ্যই ভালোই হয়েছিল। ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার জানেমান মালান ও কুইন্টন ডি কক। সপ্তম ওভার শেষ হওয়ার আগেই বিনা উইকেটে ৪৬ রান তুলে ফেলেন তারা। এরপরই প্রত্যাবর্তনের গল্প শুরু বাংলাদেশের। ব্রেক থ্রু এনে দেন মিরাজ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যাচ বানান ১২ রান করা ডি কককে।

মিরাজের দেখানো পথেই হাঁটলেন বাকিরা। ইনিংসের বাকি সময় বাংলাদেশের বোলিং বিভাগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাসকিন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারের নজির গড়েন ডানহাতি পেসার। প্রথমবার ২০১৪ সালে; অভিষেক ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে।

স্বপ্নপূরণের আনন্দে সেঞ্চুরিয়নের সবুজ গালিচায় সিজদাহ দিয়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাসকিন। তাঁর দারুণ বোলিংয়ে ৮৩ রানের মধ্যে স্বাগতিকদের পাঁচ উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। এই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। শুরুর বিপর্যয়ে প্রোটিয়াদের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার কাইল ভেরেনি (৯), অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা (২) ও রসি ফন ডার ডুসেন (৪) যেতে পারেননি দুই অংকে।

উইকেটে থিতু হয়ে থাকা মালানকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তাসকিন। ৩৯ রানে ফেরেন প্রোটিয়া ওপেনার। এরপর আরো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন তাসকিন। ডেভিড মিলার (১৬) ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস (২০) কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও দুজনকেই তুলে নেন তিনি। শেষ দিকে কেশব মহারাজের (২৮) লেজের লড়াইয়ে কোনোরকম দেড় শ ছাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

স্বাগতিকদের অল্প রানে অলআউট করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাসকিন। নয় ওভারে ৩৫ রান খরচায় পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন ডানহাতি পেসার। সমান ওভারে ২৪ রানে সাকিবের শিকার দুটি। প্রোটিয়াদের পতন হওয়া বাকি তিন উইকেটের একটি করে নিয়েছেন পেসার শরিফুল ইসলাম ও স্পিনার মিরাজ।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.