স্কুল পরীক্ষার পর এবার বন্ধ হল সংবাদপত্র

কাগজ সংকটের কারণে কয়েকদিন আগে শ্রীলঙ্কায় স্কুলের পরীক্ষা বাতিল করা হয়। একই কারণে এবার দেশটির জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা দ্য আইল্যান্ডের প্রিন্ট ভার্সন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশটির সরকারি দপ্তরগুলোও আগামী দুই মাসের মধ্যে এ সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর দ্য হিন্দু।

শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় দৈনিক দ্য আইল্যান্ড

চারদশকের বেশি সময় ধরে প্রকাশ হয়ে আসছিল দৈনিক দ্য আইসল্যান্ড। ১৯৮১ সালে চালু হওয়ার পর থেকে শুধু এপ্রিল মাসে বার্ষিক সিংহল-তামিল নববর্ষের ছুটিতে প্রকাশনা বন্ধ রাখা হতো। দেশটিতে চলা গৃহযুদ্ধের সময়ও এর মুদ্রণ বন্ধ হয়নি। করোনার সময় কিছুদিন প্রকাশিত হয়নি বিতরণ করা সম্ভব ছিল না বলে। এছাড়া আর কোনো কারণে পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়নি। কিন্তু কাগজ সংকটের কারণে এবার ঠিক তাই করতে হচ্ছে।

দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে পত্রিকাটির সম্পাদক প্রভাত সহবন্দু বলেন, আমরা একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে শনিবার (আজ) ছাপা বন্ধ রাখছি। কারণ পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। শ্রীলঙ্কার অনেক সংবাদপত্র ইদানীং পাতলা হয়ে যাচ্ছে। আমরা সকলেই পৃষ্ঠা কমাতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ কাগজ, কালি, প্লেটসব সবকিছুই আমাদের আমদানি করতে হয়। আর্থিক সংকট সবগুলোর ওপরই প্রভাব ফেলেছে।

শ্রীলঙ্কার পতাকা

সহবন্দু বলেন, সরকারি প্রেসগুলোও ইঙ্গিত দিয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদেরও কাগজ ফুরিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তারা গেজেট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অফিসিয়াল নথিগুলি কীভাবে ছাপা হবে তা নিয়ে চিন্তিত।

পর্যাপ্ত কাগজের অভাবে এই সপ্তাহের শুরুতে দেশের শিক্ষা বিভাগ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা স্থগিত করে। কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, কাগজের ক্রমাগত ঘাটতির মধ্যে তারা নতুন মেয়াদে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ সম্পন্ন করতে পারেনি।

তামিল দৈনিক ভিরাকেসারির শীর্ষ কর্মকর্তা কুমার নাসেদান বলেন, প্রায় তিন মাস আগে আমরা যখন নিউজপ্রিন্টের জন্য একটি অর্ডার দিয়েছিলাম, তখন প্রতি টন ছিল ৭৫০ ডলার, এখন তা ১০৭০ ডলার। আমাদের উৎপাদন খরচের প্রায় ৭০ শতাংশ নিউজপ্রিন্টের পেছনে ব্যয় হয়। এ পরিস্থিতিতে, মান খারাপ হওয়া সত্ত্বেও ভারত থেকে নিউজপ্রিন্ট আমদানি করতে বাধ্য হচ্ছি।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থানে রয়েছে। আমদানিনির্ভর দ্বীপ রাষ্ট্রটির সব সেক্টরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রার পতন হয়েছে।