ইংলিশরা কতোটা কঠিন প্রতিপক্ষ?

শুক্রবার থেকে নতুন পরীক্ষায় নামছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও তার দল। এ দিন ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবেন তারা। তার আগে পরিসংখ্যান এবং সাম্প্রতিক পারফর্মের বিচারে দেখে নেয়া যাক ইংলিশরা কতোটা কঠিন প্রতিপক্ষ।

ইংলিশদের সাম্প্রতিক পারফর্মের আগে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের লড়াইয়ের ইতিহাসে একবার চোখ বুলানো যাক। ইংলিশদের বিপক্ষে এই সিরিজের আগে বাংলাদেশ মোট ১৬টি ওয়ানডে খেলেছে। এর মধ্যে হারতে হয়েছে ১৩টিই। জয় এসেছে মাত্র তিনটিতে।

পরিসংখ্যানের এই অংশটুকু নিশ্চয় হতাশ করবে বাংলাদেশি দর্শকদের। কিন্তু আশার কথা হলো দুই দলের সর্বশেষ সাক্ষাত হওয়া পাঁচ ম্যাচের তিনটিই জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দুটি আবার বিশ্বকাপে। দুই দলের সর্বশেষ দুটি ম্যাচের উভয়টিই হয়েছে বিশ্বকাপে; একটি ২০১১ সালে, অপরটি ২০১৫ সালে। অর্থাৎ টানা দুই ম্যাচ জয়ের স্মৃতি নিয়েই কাল ইংলিশদের বিপক্ষে মাঠে নামছেন মাশরাফিরা।

পরপর দুটি জয়ের স্মৃতি থাকলেও, সে স্মৃতি খুব বেশি টাটকা নয়। সর্বশেষ জয়টিও যে এসেছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে। এ ছাড়া সর্বশেষ এক বছরে বেশ বদলে গেছে ইংলিশরা। ভয়ডরহীন ক্রিকেটের নতুন ‘অ্যাম্বাসেডরই’ হয়ে উঠেছে তারা।

চলতি বছরের শুরুতে ভারতে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রানার্স আপ হয়েছে ইংলিশরা। উপমহাদেশে ইংলিশরা তেমন ভালো পারফর্মার নয় বলে যে একটা কথা প্রচলিত আছে, সেই কথাটা মোটামুটি পুরোনো এখন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংলিশদের অসাধারণ পারফর্ম সেটাই প্রমাণ করে।

বাংলাদেশে আসার আগে গত ১২ মাসে ইংলিশরা খেলেছে মোট ১৯টি ওয়ানডে। এর মধ্যে ১২টিই জিতেছে তারা। পরিসংখ্যানের এই নিরীহ তথ্যটা হয়তো এই সময়ে তারা কতোটা দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে, তা বোঝাতে পারছে না। তবে পরিসংখ্যানের খাতাটা আরো একটু বিস্তৃত করে খুললে পাওয়া যাবে অনেক তথ্য।

গত এক বছরে ইংলিশরা যে ১২টি ম্যাচ জিতেছে, তার মধ্যে সাতটিতে ৩০০-এর বেশি রান করেছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। এর মধ্যে তিন উইকেটে ৪৪৪ রানের মতো অবিশ্বাস্য এক ইনিংসও আছে তাদের। আছে ৩৯৯ রানের চারশ ছোঁয়া আরো একটি ইনিংস। পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে এই রকম রানে পাহাড় গড়ার কাজ কিন্তু সহজ নয় মোটেই।

গত এক বছর ইংলিশদের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন জো রুট। ১৯ ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি এবং আট হাফ সেঞ্চুরিতে ৯৪১ রান করেছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে অ্যালেক্স হেলসের ব্যাট থেকে। ১৮ ম্যাচে তার সেঞ্চুরি চার এবং হাফ সেঞ্চুরি চারটি। বাংলাদেশি সমর্থকরা খুশি হতে পারে এটা জানল যে, বাংলাদেশের বিপক্ষে এই দুজনের একজনও নেই।

সেই খুশিটা মিলিয়ে যেতে পারে জ্যাসন রয় ও ইয়ন মরগানের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা জস বাটলের গত এক বছরের কীর্তির কথা জানলে। গত এক বছরে তিনটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে জ্যাসন রয় করেছেন ৭৫৬ রান আর একই সময়ে ১৭ ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি ও তিন হাফ সেঞ্চুরিতে বাটলার করেছেন ৬০৫ রান।

একই সময়ে বল হাতে ইংলিশদের সাফল্যের পতাকা বয়েছেন আদিল রশিদ ও ওকস। রশিদ ১৯ ম্যাচের ১৮টি খেলে নিয়েছেন ২৩ উইকেট। ওকসও ২৩ উইকেট নিয়েছেন, তবে তিনি খেলেছেন ১৫টি ম্যাচ। সব মিলিয়ে পরিসংখ্যানের বিচারে জ্যাসন রয়, জস বাটলার, আদিল রশিদ ও ক্রিস ওকসই এই সিরিজে বাংলাদেশের প্রধানতম হুমকি।

এ ছাড়া উপমহাদেশের কন্ডিশনে চমকে দিতে পারেন মঈন আলিও। তার সঙ্গে বাংলাদেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে ডেভিড বিলে ও বেন স্টোকসকে সামলাতেও।

ইংল্যান্ড যে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষই, সেটা বলছেন মাশরাফিও। সিরিজ শুরুর আগের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা এই সিরিজে সাম্প্রতিক সময়ের কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গেই খেলতে যাচ্ছি। অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ডই সাম্প্রতিক সময়ের সেরা।’

আপনি আরো পড়তে পারেন

এক নজরে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজের সময় সূচি

ওয়ানডেতেও স্থায়ী হচ্ছেন ইমরুল?

আমরা প্রস্তুত, বললেন মাশরাফি

বাংলাদেশ- ইংল্যান্ড সিরিজ: নিরাপত্তায় থাকবে সেনাবাহিনীও

ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়লো পাকিস্তান