কূটনৈতিক দুঃস্বপ্নের মুখে পড়তে যাচ্ছে ভারত!

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সেই পরিচিত গেম আবারও খেলল ভারত। দেশটি জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া থেকে ফের বিরত থেকেছে। এর মাধ্যমে এটা এখন স্পষ্ট যে, দিল্লি ইউক্রেনের ওপর তার নিরপেক্ষ অবস্থানের সাথে আপস করতে ইচ্ছুক নয়। বিবিসি।

রাশিয়া ও ভারতের পতাকা

ভারত সরাসরি রাশিয়ার সমালোচনা করেনি এবং নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়াতে রাশিয়ান তেল আমদানি এবং অর্থপ্রদান অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, পশ্চিমারা কতদিন ভারতের অবস্থানকে নিরপেক্ষ হিসেবে ধরে রাখবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের এই অবস্থান শিগগির কূটনৈতিক দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে ইতোমধ্যেই ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কিছু জোরালো বক্তব্য এসেছে। একজন কর্মকর্তা সম্প্রতি বলেছেন, রাশিয়ার সাথে ভারতের অস্পষ্ট কৌশলগত অবস্থানের পরিণতি হবে মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদী।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ভারত তার পরীক্ষিত মিত্র মস্কোর পাশে দাঁড়িয়েছে কিন্তু তার বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য পশ্চিমাদেরও প্রয়োজন। এ কারণে উভয়ের ভারসাম্য বজায় রাখা দিল্লির জন্য একটি কূটনৈতিক দুঃস্বপ্ন হতে চলেছে।

আবারও ভোটে বিরত থাকল ভারত: ইউক্রেনের বুচা শহরে হত্যাকাণ্ডের পর রাশিয়াকে মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে বৃহস্পতিবার ভোটদানে বিরত থাকা ৫৮টি দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত। কেন এমনটি করল ভারত?

ইউক্রেনে রুশ হামলার পর থেকে ভারত শান্তি-সংলাপ এবং কূটনীতির পক্ষে দাঁড়িয়েছে। দেশটির বক্তব্য, আমরা বিশ্বাস করি, রক্ত ঝরিয়ে এবং নিরপরাধ জীবনের মূল্য দিয়ে কোনো সমাধানে আসা যাবে না। ভারত যদি কোনো পক্ষ বেছে নেয় সেটা হবে শুধু শান্তি ও সহিংসতা অবসানের পক্ষ।

দেশটি এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানাতে জাতিসংঘের আটটি ভোটে বিরত থেকেছে। তবে গত বুধবার বুচা হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে এবং স্বাধীন তদন্তের আহ্বানকে সমর্থন করেছে দেশটি। এর মাধ্যমে যুদ্ধের সবচেয়ে শক্তিশালী বিবৃতিটি জারি করে ভারত।

ভারত দীর্ঘস্থায়ী নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়ে অন্যদের চাপের মুখে পড়েছে। কারণ পশ্চিমারা রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে। রাশিয়া ভারতের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা সরবরাহকারীও।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লি জানিয়েছে, মস্কোর সাথে দেশটি অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করার দিকে মনোনিবেশ করেছে এবং বাণিজ্য নিষ্পত্তির ব্যবস্থা তৈরি করতে কাজ করছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, রাশিয়ার সাথে অর্থনৈতিক কার্যকলাপের কিছু যাতে অব্যাহত থাকে সেটা নিশ্চিত করছি। তবে আমরা কীভাবে এটিকে স্থিতিশীল রাখতে পারি তা দেখার চেষ্টা করছি।