৪ কারণে আগামী নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, কাজ করছে ‘টুয়েসডে গ্রুপ’

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৩ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ সালের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচনকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন বিদেশিরা। এর পেছনে অন্তত ৪টি প্রধান কারণ থাকার কথা বলছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন।

রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, ফাইল ছবি

দৈনিক মানবজমিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য আগামী নির্বাচনটি অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া ঢাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ, অনেক বেশি প্রতিযোগিতার মুখে পড়া, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা, আন্তর্জাতিক বাজার ধরা, বিদেশি বিনিয়োগ টানা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আর সুশাসনের কথা উল্লেখ করেন ব্রিটিশ কূটনীতিক।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে অর্থনৈতিক সংস্কার নিশ্চিতের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠানে আস্থা ফিরবে বলে মনে করেন রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন। তার মতে, মানুষকে অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ, ভোটের আগে মুক্ত বিতর্ক করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়ার ওপর বেশি জোর দিতে হবে। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিশ্চিত করতে হবে।

জনগণ ও প্রার্থীদের আস্থা থাকার মতো ঠিকভাবে ভোট গণনা ও ফল প্রকাশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, এ ব্যাপারে কমিশনকে শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। ভোটের ফল যা-ই হোক, তা মেনে নিতে হবে সবাইকে। এটাই নির্বাচনের সংস্কৃতি।

ভালো নির্বাচন করার মতো প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কারিগরি সক্ষমতা ঢাকার রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রেসক্রিপশন দেওয়া ঠিক হবে না। অগ্রযাত্রার বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে এখানে গণতন্ত্র অত্যাবশ্যক বলে মনে করি আমরা। সে জন্য আগামী নির্বাচনের ওপর গভীর নজর রাখা হবে। এ নিয়ে ঢাকায় অবস্থিত অন্যান্য দেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

২০০৭ সালের জরুরি আমল থেকে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করা বিদেশি কূটনীতিকরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিয়মিত বৈঠকে বসতেন। ১৯৯০, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তারা ভূমিকা রাখলেও ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তেমনটি ঘটেনি। তবে ‘টুয়েসডে গ্রুপের’ মতো একটি গ্রুপ গঠনের চেষ্টা বলছে বলে সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে রাজি না হলেও রবার্ট ডিকসন বলেন, বিশ্বজুড়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে উদার গণতন্ত্র ও মূল্যবোধ। এ ক্ষেত্রে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ‘ওয়েকআপ কল’ রূপে কাজ করছে। আমরা গণতন্ত্রকে বেছে নেব নাকি স্বৈরাচার বা কর্তৃত্ববাদ? গণতান্ত্রিক শাসনে নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এসব নিয়ে কূটনীতিকদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, আনুষ্ঠানিক কোনো উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি।