‘হয়তো আমার ভুঁড়িটাও নেমে যেতে পারতো’

রাজধানীতে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছরই বেপরোয়া হয়ে ওঠে চক্রগুলো। অজ্ঞান পার্টি-মলম পার্টি তো আছেই, সেই সাথে কিছুটা নিরিবিলি গলিতে পথচারী ও যাত্রীদের সঙ্গে থাকা অর্থ, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার ছোঁ মেরে দৌড়ে পালায় একটি চক্র। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তেমনই এক ঘটনার শিকার হয়েছেন সিনিয়র সাংবাদিক মোজাব্বীর হাসান।

ছিনতাইয়ের শিকার সিনিয়র সাংবাদিক মোজাব্বীর হাসান

বণিক বার্তায় কাজ করা এই সংবাদকর্মীর সঙ্গে ঘটনাটি ঘটে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে। রাত প্রায় ১২টার সময় ওই এলাকার একটি গলির ভেতর দিয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন তিনি। আচমকা রিকশার পেছন দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেয় কেউ! সেকেন্ডের ব্যবধানে ঘটে গেল ঘটনাটি। মোজাব্বীর হাসান বলছেন, সামান্য এদিক-ওদিকে হলে আমার ভুঁড়িটাও নেমে যেতে পারতো।

ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মোজাব্বীর হাসান। সেখানে তিনি লেখেন, রিকশার পেছনের ফাঁকা অংশ দিয়ে ছুরি হাতে মুহূর্তের মধ্যে যে পোঁচ দেওয়া হলো, সেটা সঙ্গে সঙ্গে বুঝা যায়নি। কারণ চলন্ত রিকশা ততক্ষণে অনেকটা এগিয়ে গেছে। ঘটনা টের পাওয়া গেল রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দেওয়ার সময়।

মোজাব্বীরের ভাষ্য, রিকশা থেকে নেমে দেখি মোবাইলটা কোনোমতে পাঞ্জাবীর পকেটে ঝুলে আছে। পকেটের ভয়ানক দশা। মুহূর্তের মধ্যে ঘটা ঘটনাটির ফ্ল্যাশব্যাক শরীরকে হিম করে দিয়ে গেল। সামান্য এদিক-ওদিক হলেই উরুটা ফাঁক হয়ে যেতে পারতো কিংবা ভুঁড়িটা নেমে যেতে পারতো!

সাধারণত ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার পর অনেকেই এসব নিয়ে আর থানা-পুলিশ করতে চান না। তারপরও পুলিশের কাছে এ সংক্রান্ত যত অভিযোগ জমা পড়ছে, সেই সংখ্যা রীতিমতো অস্বাভাবিক। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে রাজধানীর ৫০টি থানা এলাকায় ৮৪৪টি ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, রাজধানীতে এসব ঘটনা ঘটছে মাসে ২৮১টি, দিনে ৯টি। ৮৪৪টি ঘটনার মধ্যে ছিনতাই ২০৭টি এবং চুরি-ডাকাতি ৬৩৭টি। বলা বাহুল্য, অভিযোগ করা এসব ঘটনার বাইরে থেকে যাচ্ছে আরও কয়েকগুণ। এসব থেকে আন্দাজ করা যায়, রাজধানীতে সাম্প্রতিককালে ছিনতাইকারীদের উপদ্রব কতটা বেড়েছে!