বদলে যাচ্ছে রাজধানীর বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা

রাজধানীর বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা একেবারেই বদলে যাচ্ছে, আসছে আমূল পরিবর্তন। খুঁটিতে ঝুলন্ত তারের বদলে এখন মাটির নিচ দিয়ে যাবে বিদ্যুৎ লাইন। ঢাকায় ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ’ চলতি বছরের ১ জানুয়ারি শুরুও হয়েছে। এর ফলে তেজগাঁওয়ের মণিপুরী পাড়ায় আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হচ্ছে।

বদলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা

সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ডিপিডিসির দু’টি প্রকল্পের আওতায় আন্ডারগ্রাউন্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ চলছে। করোনা মহামারিসহ নানা কারণে এতে ধীরগতি দেখা দিলেও এখন বেশ জোরেশোরে চলছে এ কাজ। বর্তমানে নির্ধারিত রুটগুলোর প্রধান সড়কের দু’পাশে হরাইজোন্টাল ড্রিলিং ড্রাইভের কাজ চলছে।

আন্ডারগ্রাউন্ড হাইভোল্টেজ ক্যাবলিং নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে ভূগর্ভস্থ লাইনের সাহায্যে গ্রিড সাবস্টেশন থেকে গ্রাহক পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। কয়েক ধাপের এই কাজের প্রথম ধাপে ২৯ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ লাইন নির্মাণ করা হবে। রুটটি গাবতলী থেকে আজিমপুর এবং জাহাঙ্গীর গেট থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে।

বদলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা

এ ছাড়া জাহাঙ্গীর গেট থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত আধুনিক রিং মেইন ইউনিট, আরএমইউ, লো-টেনশন ডিস্ট্রিবিউশন বক্স এবং কিয়স্ক ট্রান্সফরমার বসানো হচ্ছে। এরইমধ্যে ২০টি আরএমইউর মধ্যে ১৩টি এবং ২৪টি এলটিডিবির মধ্যে ১০টির ভিত্তি স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিপিডিসির লাইন বিতরণ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক শাহেদ মাহবুব ভুঞা বলেন, আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে উন্নত ব্যবস্থাপনা স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক তারের ঝুঁকি কমবে। সেইসঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সাল নাগাদ গাবতলী-আজিমপুর ও জাহাঙ্গীর গেট-বঙ্গভবন রুটের কাজ শেষ হবে।

এর আগে গত ১ জানুয়ারি রাজধানীতে প্রথমবারের মতো তেজগাঁওয়ের মণিপুরী পাড়ার আন্ডারগ্রাউন্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রাঙ্গণের একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র থেকে এই সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

সে সময় ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেছিলেন, প্রকল্পটির কাজ আগে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কিছুটা দেরি হয়েছে। ৩ বছর মেয়াদী প্রকল্পটি শেষ করতে আরো ২ বছর সময় লাগতে পারে। আন্ডারগ্রাউন্ড লাইনে প্রথমটি সড়কের উভয় পার্শ্বে ১৯ কিলোমিটার এবং দ্বিতীয়টি ১০ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড বিতরণ নেটওয়ার্কে রূপান্তর করা হবে। এতে কাজ করছে চীনা দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

২০২৫ সাল নাগাদ সম্পূর্ণ ঢাকা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে একই ধরনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশে প্রথমবারের মতো সিলেটের দরগাহ গেট আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্কে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয় গেলো বছরের জানুয়ারিতে।