নাসির ফিরলেন, কতোটা লাভ হবে বাংলাদেশের?

আজ সিরিজে টিকে থাকার লড়াইয়ে ইংলিশদের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ দিয়েই ওয়ানডেতে ফিরলেন নাসির হোসেন। তার ফেরা নিয়ে বেশ গুঞ্জন চলছিলো প্রথম ম্যাচ হারের পর। নাসিরের ফেরার মাধ্যমে কটা লাভ হবে? কিংবা নাসিরকে আসলেই কতোটা ভালো ফিনিশার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে বাংলাদেশ?

নাসির সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৫ সালের নভেম্বরে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপর বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলেছে সব মিলিয়ে চারটি; তিনটি আফগানিস্তানের বিপক্ষে আর একটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই সিরিজের প্রথম ম্যাচ।

নাসিরের শেষ ওয়ানডে খেলার পর বাংলাদেশ মোট ২২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে নাসির সুযোগ পেয়েছেন চারটিতে। সে হিসেবে ১৮ ম্যাচ পর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আজই ফিরতে পারেন নাসির। ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেও হেরে গেছে বাংলাদেশ। ধারণা করা হয়, শেষ দিকে একজন ব্যাটসম্যান থাকলে ম্যাচের পরিণতি অন্য রকম হতে পারতো।

এই যুক্তিতে মোশাররফ হোসেনের জায়গায় নাসির থাকলে ভালো হতো, এমন বিশ্বাস সমর্থকদের। বিশেষজ্ঞদের অনেকেও দিচ্ছেন এমন মত। সমর্থক ও বিশেষজ্ঞদের চাপের মুখেই নাসির দলে ফিরছেন; ব্যাপারটা অবশ্য এ রকম নয়। মোশাররফ হোসেন পড়েছেন ইনজুরিতে, মূলত এ সুযোগই নাসিরকে ফেরানো হতে পারে দলে।

তো নাসির যদি সত্যিই ফিরেন, কতোটা লাভ হবে বাংলাদেশের? আসলেই কি বদলে যাবে বাংলাদেশ? পরিসংখ্যান বলছে, ৫৬ ওয়ানডের ৪৫ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে নাসির রান তুলেছেন ৩২.৩৯ গড়ে। তার স্ট্রাইক রেট ৮০.৬১। সেঞ্চুরি করেছেন একটি এবং হাফ সেঞ্চুরি আছে ছয়টি। নাসির ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন মোট

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নাসির সবচেয়ে বেশি ১৬ বার ব্যাটিং করেছেন ছয় নম্বরে। তাকে ১৩বার নামানো হয়েছে সাত নম্বরে। আটবার আট নম্বরে খেলতে হয়েছে নাসিরকে। পাঁচবার পাঁচ নম্বরে এবং তিনটি ম্যাচে নাসিরকে নামানো হয়েছে চার নম্বরে। এখন পর্যন্ত নাসির টানা সর্বোচ্চ ১০ ইনিংস খেলেছেন ছয় নম্বরে। অর্থাৎ ৪৫ ইনিংসে নাসির স্থির হয়ে খেলতে পেরেছেন কমই।

নাসির তার ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরিটি পেয়েছেন ছয় নম্বরে খেলে। ছয় নম্বরে নেমে তিনটি হাফ সেঞ্চুরিও করেছেন নাসির। সাত নম্বরে নেমে নাসির বলার মতো কিছু করতে পারেননি। সর্বোচ্চ রান ৪৭। আটবার আট নম্বরে নেমে নাসির হাফ সেঞ্চুরি করেছেন দুটি; দুটি ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। পাঁচ নম্বরে পাঁচবার নেমে নাসিরের সর্বোচ্চ রান ৪১, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০১৪ সালের কাপের ওই ম্যাচেও বরণ করতে হয়েছে হার। পাঁচ নম্বরে নেমে ৩৩ রানে অপরাজিত থেকে পালেকেল্লেতে অবশ্য বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন নাসির। ২০১২ সালের এশিয়া কাপে চার নম্বরে নেমে ভারতের বিপক্ষে ৫৪ রান করে বাংলাদেশকে আরো একবার জয়ের মুখ দেখিয়েছিলেন তিনি।

নাসির যে ৫৬টি ম্যাচ খেলেছেন তাতে বাংলাদেশ জিতেছে ২৪টিতে। এই ২৪ ম্যাচের ১৬টিতে ব্যাটিং করে ৩৯.৬০ গড়ে ৩৯৬ রান করেছেন তিনি। নাসির ক্যারিয়ারে যে কয়েকটি ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন, তার মধ্যে চারটিতেই দলকে জিতিয়ে ফিরেছেন। সব মিলিয়ে নাসিরের ক্যারিয়ার বিশ্লেষণ বলছে, যথেষ্ট সামর্থ্যবান হলেও নাসিরকে যথাযথ ব্যবহার করতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। যেটুকু সুযোগ তিনি পেয়েছেন, কাজে লাগিয়েছেন তার বেশিরভাগই।

আপনি আরো পড়তে পারেন

আজ দেখা যেতে পারে নাসিরকে

দুই প্রস্তুতি ম্যাচের দুই দল ঘোষণা করলো বিসিবি

নাসির কার জায়গায় খেলবেন, প্রশ্ন বিসিবি সভাপতির

‘মাশরাফিরা ঘুরে দাঁড়াবে’

আসিফ ইকবালকে দেখতে হাসপাতালে বিসিবি সভাপতি