গম বিতর্কে ভারতের পাশে চীন, জি-৭ দেশগুলোর সমালোচনা

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষিতে পুরো বিশ্বের আমদানি-রপ্তানি, ব্যবসা-বাণিজ্যের ধারা পাল্টে গেছে। পামওয়েল রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া, ভারত বন্ধ করেছে গম রপ্তানি। বিষয়গুলো নিয়ে এরই মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের গম রপ্তানি বন্ধের সমালোচনা করেছে জি-৭। তবে এক্ষেত্রে দেশটির পাশে দাঁড়িয়েছে শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত চীন।

গম রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে সমালোচনায় পড়েছে ভারত

ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ গম উৎপাদক দেশ হলেও কখনোই প্রধান রপ্তানিকারক দেশ ছিল না। উৎপাদিত গম দিয়ে মূলত দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মেটানো হতো। এদিকে, রাশিয়া হামলা চালানোর পর ইউক্রেনের গম রপ্তানি অনেকটাই কমে যায়। অন্য যে দেশগুলো গম উৎপাদন করে, সেগুলোতেও খরা ও বন্যার কারণে গম উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ে। এ অবস্থায় ভারতের গমের আশায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা।

কিন্তু মার্চ ও এপ্রিলের দাবদাহের কারণে গমের ফলন কম হয়েছে দাবি করে মোদি সরকার গম রপ্তানির সিদ্ধান্ত বাতিল করে। বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্য সংকটের এই মুহূর্তে ভারতের এমন ঘোষণায় ‘রুষ্ট’ হয়েছে জি-৭-ভুক্ত পশ্চিমা দেশগুলো। এ অবস্থায় ভারতের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে পাল্টা অবস্থান নেয় চীন।

গম রপ্তানি ইস্যুতে ভারতের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে চীন

চীনের সরকারি দলের মুখপাত্র গ্লোবাল টাইমস এক প্রতিবেদনে লেখেছে, ভারতকে দোষারোপ করলে খাদ্য সংকট মিটে যাবে না। প্রতিবেদনে উল্টো পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি গম রপ্তানি না বাড়ানোর অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের লক্ষ্য করে বলা হয়েছে, আজকে জি-৭-ভুক্ত দেশগুলো ভারতের কাছে আবেদন করছে যাতে গম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি না করা হয়। তাহলে এই দেশগুলো খাদ্য সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে নিজেরা কেন গম রপ্তানি বাড়াচ্ছে না?

গম নিয়ে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করে বলে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত নিজেরাই খাদ্য সংকটে থাকে। এ অবস্থানে থেকে যদি কোনো পশ্চিমা দেশ খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করত, তাহলে কি একই প্রশ্ন উঠত? চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসে জি-৭ দেশগুলোকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ভারতের সমালোচনা না করে নিজেরা খাদ্য সংকট মেটাতে এগিয়ে আসুক।

এদিকে ভারত জানিয়েছে, যে সকল রপ্তানির ‘লেটার অফ ক্রেডিট’ ইস্যু হয়ে গিয়েছে, সেই চুক্তি বহাল রাখবে ভারত, তাদেরকে গম সরবরাহ করা হবে। তবে দেশের বর্তমান খাদ্য সংকটের আবহে আপাতত অন্য ক্ষেত্রে গম রপ্তানি বন্ধ থাকবে।