বিদ্যুৎ নেই, শ্রীলঙ্কায় নতুন বিপর্যয়

নতুন সরকারি বিধিবিধান আরোপের প্রতিবাদে শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানির প্রকৌশলীরা ধর্মঘটে নেমেছেন। এতে দেশটির রাজধানীর বিশাল এলাকাসহ অন্যান্য এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য, কয়েক দশকের মধ্যে দেশটি সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করছে। হঠাৎ করে এই বিদ্যুৎহীন অবস্থা নতুন করে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। খবর আল জাজিরা।

বিদ্যুৎ নেই, শ্রীলঙ্কায় নতুন বিপর্যয়

খবরে বলা হচ্ছে, প্রধান রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি সিলন ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের (সিইবি) প্রায় ১ হাজার ১০০ প্রকৌশলীর মধ্যে প্রায় ৯০০ জন বুধবার মধ্যরাতে ধর্মঘট ডাকেন। তাদের কর্মবিরতিতে প্রায় ১০০০ মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় এমন আটটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

সিইবি ইঞ্জিনিয়ার্স ইউনিয়ন বিদ্যুত খাতের আইন সংশোধনের সরকারি পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে। বিদ্যুৎমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেছেন, তিনি আইনে পরিবর্তন আনতে উন্মুক্ত ছিলেন, যা সংসদে উপস্থাপন করা হবে। সস্তায় ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়ার অধিকার গ্রাহকদের রয়েছে।

উইজেসেকেরা এক টুইট বার্তায় আরও বলেন, যদি বিদ্যমান সিইবি আইনের সংশোধনের প্রয়োজন না হয় এবং বিলম্ব না করে নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষমতা থাকে, তাহলে কেনো সিইবি বছরের পর বছর ধরে গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে।

সিইবি ইঞ্জিনিয়ার্স ইউনিয়নকে ধর্মঘট থেকে বিরত করার জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে বুধবার গভীর রাতে একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহকে একটি অপরিহার্য পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে প্রেসিডেন্টের ওই জরুরি আইনি নির্দেশে প্রকৌশলীদের কাজে যোগদান বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে গভীর রাতে ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টকে ফোন করেন এবং পুরো বিদ্যুৎ গ্রিড যাতে ভেঙ্গে না পড়ে সেজন্য অনুরোধ করেন।

ইউনিয়নের যুগ্ম সচিব এরঙ্গা কুদাহেওয়া রয়টার্সকে বলেছেন, প্রেসিডেন্টের জরুরি নির্দেশনায় আমরা হাসপাতাল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবায় বিদুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করছি। তবে ধর্মঘট চলবে।

সরকার নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার দেশের বিদ্যুৎ সংকটের সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে দেখছে। এজন্য প্রকল্পের দ্রুত অনুমোদন এবং বাস্তবায়নের জন্য সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।

বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক পাবলিক ইউটিলিটি কমিশনের চেয়ারম্যান জনকা রত্নায়েক রয়টার্সকে বলেন, প্রকৌশলীদের ধর্মঘটে রাজধানী কলম্বোর কিছু অংশসহ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। আমরা এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কাজ করছি।

বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানি করতে না পারায় শ্রীলঙ্কা এই বছরের শুরুর দিকে দীর্ঘ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়েছিল। মৌসুমী বৃষ্টি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকে ভূমিকা রাখায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।