চান্দিকার ভরসার হাত থাকছে সাব্বিরের কাঁধেই

সাব্বির রহমানের ব্যাটিংয়ের ধরনটা ঠিক তিন নম্বরের ব্যাটসম্যানের সঙ্গে যায় না। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি এতো উপরে ব্যাটিং করে অভ্যস্ত নন। তারপরও তাকে তিন নম্বরে তুলে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে। প্রত্যাশা মেটাতে না পারলেও খুব একটা খারাপ করেননি সাব্বির। কিন্তু তারপরও তাকে তিন নম্বর থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সাত নম্বরে। আবার কোচ তাকে উপরে উঠিয়ে এনেছেন। আবার হয়তো আরো লম্বা সময়ের জন্যই তিন নম্বরে দেখা যাবে সাব্বিরকে। আপাতত চান্দিকার ভরসার হাত থাকছে তার কাঁধেই।

মঙ্গলবার অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশের কোচ। সাব্বির বিষয়ক প্রশ্নে সেখানে চান্দিকা বলেছেন যে, সাব্বিরকে তিন নম্বরে আনার সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিলো। কারণ নিজের দিনে, সাব্বির যখন রান পাবেন, তখন আসলে প্রতিপক্ষের করার কিছুই থাকবে না। তার ব্যাটিং বাংলাদেশের জন্য হতে পারে অসাধারণ এক ব্যাপার। কিন্তু তাকে তিন থেকে সরিয়ে ফেলাটা ছিলো ভুল সিদ্ধান্ত। কোচ অকপটে স্বীকার করেছেন এ কথা।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ঠিক আগেও তিন নম্বরেই খেলছিলেন সাব্বির। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হতেই তিনে নামানো হলো ইমরুল কায়েসকে। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ হঠাৎ করেই খেলা শুরু করলো রক্ষণাত্মক ক্রিকেট।

প্রথম দিকে মনে হচ্ছিলো, স্লগ ওভারে সাব্বিরের বিগ শটের ব্যাটিংয়ের আশায়ই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছি। এ ছাড়া সাব্বিরের তুলনায় ইমরুল কিছুটা ধীরে খেলতে পছন্দ করেন। যা বাংলাদেশকে শুরুর দিকে উইকেট হারিয়ে ফেলা থেকে পরিত্রাণ দিতে পারে। এমন সিদ্ধান্তকে খুব একটা ভুল মনে হয়নি।

কিন্তু ইমরুল কায়েস তিন নম্বরে সুবিধা করতে পারলেন না। ফলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আবার তিন নম্বরে নামানো হলো সাব্বিরকে। শুরু হলো সমালোচনাও। একজন ব্যাটসম্যান যদি না জানেন, তিনি ঠিক কোথায় ব্যাটিং করবেন, তাহলে তার মানসিক প্রস্তুতিতেও এটা বড় প্রভাব ফেলে। সাব্বিরের ব্যাটে সেই প্রভাবের নেতিবাচক ব্যাপারটা নিয়ে তাই শুরু হলো যৌক্তিক শঙ্কা।

কিন্তু মঙ্গলবার অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কোচা যা বললেন, তাতে মনে হলো তিন নম্বর জায়গাটা আপাতত সাব্বিরের জন্যই নির্ধারণ করে ফেলেছেন তিনি। এটা সাব্বিরের জন্য নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক একটা ব্যাপার। কোচের ভরসা পেয়ে সাব্বির তিন নম্বরে করে ফেলতে পারেন দারুণ কিছু।

সাব্বির এখন পর্যন্ত তিন নম্বরে ব্যাটিং করেছন ১৪ ইনিংসে। তাতে ২৭.৩০ গড়ে তিনি করেছেন ৩৫৫ রান। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনটি। একটি ইনিংসে আউট হয়েছেন ৪৯ করে। দুটি ম্যাচে খুলতে পারেননি রানের খাতা। একটি ম্যাচে আউট হয়েছেন এক করে। বাকি কয়েকটি ইনিংসে সেট হয়েও খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। সব মিলিয়ে তিন নম্বরে এখন পর্যন্ত মিশ্র অভিজ্ঞতাই হয়েছে সাব্বিরের।

কিন্তু তার ব্যাটিংয়ের ধরনটা এমন যে, সাব্বির যেদিন টিকে যাবেন, সেদিন প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য বিপদই আছে। তার মানে বাংলাদেশের সেদিন সুদিন! কে জানে, সেই সুদিন হয়তো ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালেই চলে আসতে পারে। বাংলাদেশি সমর্থকরা এমন আশা করতেই পারেন।