রোহিত শর্মার দিনে উড়ে গেলো শ্রীলঙ্কা

রোহিত শর্মার রেকর্ডময় তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরিতে ভর করে দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে স্রেফ উড়ে গেলো সফরকারী শ্রীলঙ্কা। এ দিন ১৫৩ বলে ২০৮ রান করে অপরাজিত থাকেন রোহিত। ওয়ানডেতে এটি তার তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি, অথচ আর কারো একাধিকবার এই কীর্তি গড়ার নজির নেই।

রোহিতের এই ইনিংসে ভর করে ভারত তুলেছিলো ৩৯২ রান। এই রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কা করেছে ২৫১ রান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের সেঞ্চুরির পরও তাদের হারতে হয়েছে ১৪১ রানের বিশাল ব্যবধানে। লঙ্কানদের এই হারের ফলে সিরিজে ফিরলো সমতা। ধর্মশালার প্রথম ম্যাচে হেরেছিলো স্বাগতিকরা।

এ দিকে রোহিত শর্মার ইনিংসটি উলট-পালট করে দিয়েছে রেকর্ডবুক। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলার ইতিহাসে দুই নম্বরে উঠে গেছেন তিনি। বিরাট কোহলির ব্যক্তিগত কারণে নেয়া ছুটির ফাঁকে আপাতত ভারেতর অধিনায়কত্ব সামলাচ্ছেন রোহিত। অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বড় ইনিংসটি খেলার কৃতিত্ব বিরেন্দর সেবাগের। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে ২১৯ রান করেছিলেন তিনি। সেটা ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের প্রথমবার ওয়ানডেতে দুইশ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন শচিন টেন্ডুলকার। ২০১০ সালে খেলা তার ইনিংসটি ছিলো ওয়ানডে ইতিহাসেরই প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। এরপর বিরেন্দর সেবাগ শচিনকে অনুসরণ করে ২০০ রান ছাড়িয়ে যান। তৃতীয় ভারতীয় হিসেবে ২০১৩ সালে নিজের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন রোহিত। এরপর আরো দুইবার এই কীর্তি স্পর্শ করলেন তিনি। ভারতের বাইরে মার্টিন গাপটিল ও ক্রিস গেইলের এই কীর্তি আছে। তবে কেউই একবারের বেশি এটি করতে পারেননি।

আজ চন্ডিগড়ে ইতিহাস গড়া ইনিংসটি খেলার পথে ১৩টি চার ও ১২টি ছয় মারেন রোহিত। বরাবরের মতোই রোহিতের ব্যাটিংয়ে আগ্রাসী উন্মাদানের কোনো চিহ্নই ছিলো না। কিন্তু নিজের কাজটা ঠিকই করে গেছেন তিনি। রোহিত শর্মার ব্যাটিংয়ের অনিন্দ্য সৌন্দর্যই হলো এটি।

আজকের ইনিংসটি রোহিত শর্মার ক্যারিয়ারের ১৬তম সেঞ্চুরি। ভারতীয়দের মধ্যে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে কেবল শচিন, বিরাট কোহলি ও সৌরভ গাঙ্গুলির। চলতি বছরে এটি রোহিতের ষষ্ট সেঞ্চুরি। এক ক্যালেন্ডার বর্ষে এর চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি তিনি কখনোই করতে পারেননি।

তার ইনিংসের পাশপাশি আজ ভারতের হয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেন শেখর ধাওয়ান ও শ্রেয়াশ ইয়ের। এই তিনজনের সামনেই মূলত খেই হারিয়ে ফেলে লঙ্কান বোলিং লাইন। বিশেষ করে নুয়ান প্রদিপ। তিনি ১০ ওভারে দিয়ে বসেন ১০৬ রান। পাননি কোনো উইকেট। ১০ ওভারে ৮০ রান দেন থিসারা পেরেরা। সুরাঙ্গা লাকমাল আট ওভারেই দিয়ে দেন ৭১ রান। সব মিলিয়ে লঙ্কান বোলারদের বড় দুর্দিনই ছিলো আজ।

ভারতীয় বোলাররা অবশ্য সুনিয়ন্ত্রিত ছিলেন। স্কোরবোর্ডে বিশাল রানের পুঁজিই হয়তো তাদের অনুপ্রাণিত করেছে গোছালো বোলিং করতে। ৩৯৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডে ১০০ উঠার আগেই তিন উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ম্যাচ থেকে তাদের পুরোপুরি ছিটকে যাওয়ার পথে অবশ্য সেঞ্চুরি করেন ম্যাথুস। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। যুজবেন্দ্র চহল তিনটি উইকেট নেন।