ফের ব্যাটিং বিপর্যয়, মোস্তাফিজদের দ্বিতীয় হার

ঠিক যেন আগের ম্যাচের পুণরাবৃত্তি। দ্বিতীয় ম্যাচেও ভয়াবহ ব্যাটিং ধস। লাহোর কালান্দার্সের দশম উইকেট জুটিতে টিকে থাকলেন মোস্তাফিজুর রহমান ও সোহাইল আখতার।

শনিবার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার রাতে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেটে ১১৯ রান করেছে লাহোর। ৩৬ বল ও ৯ উইকেট অক্ষত থাকতেই মামুলি লক্ষ্যটা জয় করে নিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদবিহীন কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স।

অথচ দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরুটা কি দুর্দান্তই না করেছিল লাহোর কালান্দার্স। ম্যাচের প্রথম ২০ বলে বিনা উইকেটে ৪৬ রান তুলে ফেলেছিল মোস্তাফিজের দল। সুনীল নারাইন ঝড় থামতেই পাল্টে যায় ম্যাচের চেহারা। দলীয় ৬০ রানে সাজঘরে ফিরে গেলেন আরেক ওপেনার বেন্ডন ম্যাককালামও।

নারাইন-ম্যাককালামের ব্যাট থেকে এসেছে ২৮ বলে ৫৮ রান। বাকি সবাই মিলে করলেন ৬১ রান! ১০ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৮ রানের টর্নোডো ইনিংস খেলে বিদায় নিয়েছেন নারাইন। ১৮ বলে ৩০ রানের ঝড় এসেছে ম্যাককালামের ব্যাট থেকে। ইনিংসে ৩টি চার ও দুটি ছক্কা হাঁকান নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক।

দুই ওপেনারের আউটই কাল হয়ে দাঁড়ায় লাহোরের জন্য। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয়। সাজঘরে আসা-যাওয়ার যেন প্রতিযোগিতা লেগেছিল লাহোরের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে! দুই ওপেনারের পর তৃতীয় যিনি সর্বোচ্চ ২০ রান করেছেন সেই সোহাইল মুস্তাফিজকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত অল আউটের লজ্জা এড়িয়েছেন।

শুরুতে বিশাল সংগ্রহের আভাস দেওয়া লাহোর কালান্দার্স উইকেটের স্রোত থামাতে টেস্ট মেজাজে খেলতে শুরু করে। আরেক ছোট করে বললে- গুলরাইজ সাদাফ শুরু করেন প্রস্তর যুগের ব্যাটিং। ৩১ বলে মাত্র ১৩ রান করেছেন সাদাফ। সোহাইল ২৭ বল খরচের পর অপরাজিত ছিলেন। উইকেটে তার শেষ সঙ্গী মুস্তাফিজ ৪ বলে ১ রানে অজেয় ছিলেন।

কোয়েটার দুই বোলার জফরা আর্চার ও মোহাম্মদ নওয়াজ ম্যাচের চিত্রটা পাল্টে ফেলেন। প্রথমজন লাহোরের পতন হওয়া ৯ উইকেটের তিনটি নিয়েছেন। তবে একটি শিকার কম করেও ম্যাচের নায়ক বনে গেলেন দ্বিতীয়জন। এদিন অবিশ্বাস্য বোলিংই উপহার দিয়েছেন কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে। ৪ ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়েছেন নওয়াজ! যা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা বোলিং ফিগার। অকল্পনীয় এই বোলিং নৈপুণ্য পাকিস্তানি অলরাউন্ডারের হাতে তুলে দিয়েছে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি।

১২০ রানের মামুলি লক্ষ্যে পৌঁছাতে কোয়েটার খরচ হলো ১৪ ওভার ও শেন ওয়াটসনের উইকেট। দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পেঁছে দিয়ে ফিরে আসেন অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী অলরাউন্ডার। ৪২ বলে ৫টি করে চার-ছক্কায় ৬৬ রানের ঝলমলে ইনিংসটি সাজান ওয়াটসন। তার স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন নারাইন।

তবে ওয়াটসন যতটা আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালিয়েছেন, উদ্বোধনী জুটিতে তার সঙ্গী আসাদ শফিক ব্যাট করেছেন ততটাই রয়ে সয়ে। ম্যাচ শেষে ৩৬ বলে ৩৮ রানে টিকে থাকলেন শফিক। উমর আমিন ৭ বলে ১৩ রান করেছেন।

তবে উইকেট না পেলেও লাহোরের পাঁচ বোলারের মধ্যে সবচেয়ে মিতব্যয়ী ছিলেন মোস্তফিজ। ২ ওভারে ১০ রান খরচ করেছেন তিনি।

সোমবার মোস্তাফিজদের তৃতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ করাচি কিংস। তার আগে আজ (রোববার) করাচির মুখোমুখি হবে তামিম ইকবালের পেশোয়ার জালমি।