অথচ তাদের কোনো অভাবই নেই!

ক্রিকেটে ম্যাচ জিততে কী লাগে? একটা দুর্দান্ত ইনিংস বা একটা অসাধারণ স্পেল— যথেষ্ট! সঙ্গে পুরো দলের খেলার প্রক্রিয়াটা অব্যাহত রাখা। এটুকুই তো! তবুও হারের বৃত্ত ভাঙতে ব্যর্থ বাংলাদেশ দল? অথচ দলে তো অভাব নেই কোনো কিছুর।

আসলেই কি অভাব নেই— এই প্রশ্ন উঠাটা খুবই যৌক্তিক। উত্তরও আছে! বর্তমান বাংলাদেশ দলের পারফরম আবর্তিত হয় পাঁচ সদস্যকে ঘিরে। তারা হলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ। এদের মধ্যে মাশরাফি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলেন না। বাকিরা সব ফরম্যাটে খেলেন। কিন্তু নিদাহাস ট্রফিতে নেই সাকিব। ইনজুরি তাকে ছিটকে দিয়েছে। তারপরও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছরের বেশি সময় কাটিয়ে দেয়া তিনজন মুশফিক-তামিম-মাহমুদুল্লাহ আছেন। আছেন প্রায় দশ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা রুবেল হোসেনও। তারপরও একটা হারের অন্ধকারে একটু আলো কেনো ফুটছে না?

সাধারণ তো বলে ক্রিকেট ম্যাচ জেতার জন্য দলের সবার দুর্দান্ত কিছু করার প্রয়োজন নেই। একজনের দুর্দান্ত পারফর্ম এবং বাকিদের যৌক্তিক সঙ্গই কোনো দলকে জেতাতে পারে ম্যাচ। কিন্তু বাংলাদেশের বেলায় কী এমন হয়ে গেলো যে, দলের প্রায় সব দল বেধে নেমে গেলেন ব্যর্থতার মিছিলে।

বিশ্লেষণ বলছে, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের দক্ষতার কমতি খুব বেশি নেই। তামিম-মুশফিক নিজেদের দিনে যে কোনো দলকে উড়িয়ে দিতে পারেন। মাহমুদুল্লাহও তার সেরা ছন্দের ভয়ঙ্কর। রুবেল হোসেনও নিজের কাজটা করে দিতে পারেন। তাহলে সমস্যা কোথায়?

চান্দিকা হাথুরুসিংহে কোচের পদ ছাড়ার পর দলের অন্দরমহল থেকেই শোনা গেছে যে, চান্দিকা মাঠে খেলে দেন না। সুতরাং তার যাওয়াটা দলের পারফরমে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে সেটাই, যা ঘটবে না বলে আশা ছিলো।

চান্দিকা চলে যাওয়ার সময় নিয়ে গেছেন আসলে দলের জ্বালানি শক্তি। সেই শক্তির নাম বিশ্বাস। চান্দিকা অনেক সিনিয়র খেলোয়াড়ের কাছে পছন্দের ছিলেন না। সেই তারাও এ কথা এক বাক্যে স্বীকার করেন যে, পারফরম বের করে আনার এবং দলকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার জাদুকরি ক্ষমতা ছিলো তার। যে ক্ষমতার প্রভাব দেখছে শ্রীলঙ্কা।

দক্ষতা আছে, অভিজ্ঞতা আছে এবং আছে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাও। বাংলাদেশের অভাব নেই আসলে কিছুরই, কেবল বিশ্বাসটা ছাড়া। সেই বিশ্বাস কিভাবে ফিরবে, তারও কোনো উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না টিম ম্যানেজমেন্ট। ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরুর আগে অবশ্য তামিম ইকবাল বলেছেন একটা জয়ই তাদের বদলে দিতে পারে। সেই জয় কি আজ দেখা দিবে?

গত বছর শ্রীলঙ্কা গিয়ে তাদেরকে হারানোর স্মৃতি আছে মাহমুদুল্লাহদের। কিন্তু সেই স্মৃতির চেয়ে বেশি তাজা ঘরের মাঠে লঙ্কানদের কাছে তিন ফরম্যাটে নাস্তানাবুদ হওয়ার ইতিহাস। নিদাহাস ট্রফিতে আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোন স্মৃতি থেকে অনুপ্রেরণ নিবেন মাহমুদুল্লাহরা? কোনো অভাব না থাকা বাংলাদেশ কি পারবে মাথা তুলে দাঁড়াতে?