পেস বোলিং অলরাউন্ডারের অভাব মেটাবেন সৌম্য-আরিফুল?

পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেটের হাহাকার যেনো ছুঁয়ে যাবে অনন্তকালের সীমানা! নিকট অতীতে বাংলাদেশ দল এই ‘প্রজাতির’ কোনো স্বীকৃত ক্রিকেটার পায়নি। ঘরোয়া পর্যায়ে দুই একজন আলো ছড়িয়েছেন বটে, কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উত্তপ্ত ময়দানে তারা সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেননি। ফলে সৌম্য সরকার ও আরিফুল হকদের মধ্যে সেই অভাব পূরণের আশা করছে ক্রিকেটাঙ্গন। যদিও এর ফলটা যে প্রত্যাশা মতো হবে না, সেটা বোধহয় সবারই জানা।

দুদিন পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাবে বাংলাদেশ। তার আগে রোববার ছিলো বাংলাদেশ দলের সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলন। যেখানে আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে কোচ ও অধিনায়কের কথা বলার কথা।

সংবাদ সম্মেলন হলো বটে, কোচের সঙ্গে অধিনায়ককে পাওয়া গেলো না। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ফাইনাল নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সাকিব আল হাসান যে এ দিন থাকবেন না তা জানাই ছিলো। তার বদলে এলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, টি-টোয়েন্টি দলের সহঅধিনায়ক। তিনিই সৌম্য ও আরিফুলের মধ্যে পেস বোলিং অলরাউন্ডার পাওয়ার সম্ভাবনার কথা শোনালেন।

ক্রিকেটের উঠতি শক্তিগুলোর মধ্যে আফগানিস্তানের নাম এখন সবার উপরে। কদিন পর টেস্ট অভিষেকও হয়ে যাবে তাদের। এশিয়ান দেশ বলে কিনা কে জানে, স্পিনের বিরুদ্দে যথেষ্ট পারঙ্গম তারা। এমন কি রশিদ খানের মতো স্পিনার পেয়ে প্রতিপক্ষকে স্পিনের মায়াজালে ভড়কে দেয়ার ক্ষমতাও তাদের অর্জিত হয়ে গেছে। কিন্তু পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে এখনো সাবলীল নয় তাদের ব্যাটসম্যানরা।

এই পরিস্থিতিতে যে দলে পেস বোলিং অলরাউন্ডার বেশি থাকবে, তাদের পক্ষে আফগানিস্তানকে চ্যালেঞ্জ জানানোও সহজ হবে। এ দিক থেকে চিন্তা করেই বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং অলরাউন্ডারদের অভাব নিয়ে কথা বলতে হলো রিয়াদকে।

তিনি বলেন, ‘অলরাউন্ডারদের গুরুত্ব অনেক। এরা থাকলে দলের ভারসাম্য বেড়ে যায়। বিশেষ করে পেস বোলিং অলরাউন্ডারদের ভূমিকা অনেক বড়। আমাদের সৌম্য ও আরিফুল আছে। সৌম্য নিদাহাস ট্রফিতে ভালো খেলেছে। আমার বিশ্বাস আরিফুলও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জন্য প্রস্তুত। তাদের উপর উপর আমরা আস্থা রাজতে পারি।’

মাহমুদুল্লাহ আশাবাদী হলেও পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই বোলিং করার অভিজ্ঞতা আছে সৌম্যর। টেস্টে একটি উইকেট পেতে তাকে করতে হয়েছে মোট ২৫৬টি বল। ওয়ানডেতে ৭৮ বলেও কোনো উইকেট পাননি। আর টি-টোয়েন্টিতে তিনি তিনটি উইকেট পেয়েছেন মোট ৭২টি ডেলিভারিতে। অর্থাৎ পেস বোলিং অলরাউন্ডার হয়ে উঠার মতো যথেষ্ট ক্ষমতা তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

ঘরোয়া পর্যায়েও বোলার সৌম্য বলার মতো কার্যকর নন। প্রথম শ্রেণির ৫৩টি ম্যাচে প্রায় দুই হাজার ডেলিভারিতে ২১টি উইকেট পেয়েছেন তিনি। লিস্ট-এ’তে ১২শর বেশি বলে তিনি পেয়েছেন ৩০টি উইকেট। সে তুলনায় আরিফুল হকের সম্ভাবনা একটু হলেও বেশি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। কোনোটিতেই তাকে বোলিং করতে হয়নি। ঘরোয়া পর্যায়ে অবশ্য আরিফুল নিয়মিতই বল হাতে নেন। প্রথম শ্রেণির ৭৪ ম্যাচে তার শিকার ৭৮টি আর লিস্ট-এ’তে তিনি নিয়েছেন মোট ৫২টি উইকেট।

তিন জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া সিরিজে এ দুজনের হাতে বারবার বল তুলে দিতে পারেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এ দুজনকে দিয়ে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের অভাব পূরণের যে আশা, তা পূরণের একটা চেষ্টা দেখা যেতে পারে আফগানিস্তান সিরিজে।