তামিমের স্ট্রাইকরেট কেনো এতো কম?

বাংলাদেশ দলের এক নম্বর ওপেনার তিনি। কিন্তু তার ব্যাটিং নিয়ে অনুযোগ-অভিযোগের অন্ত নেই। বলা হচ্ছে তামিম ইকবালের কথা। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দলের খেলা পরিচালিত হয় তাকে কেন্দ্র করেই। অথচ তার স্ট্রাইক রেট কি না ৮০-এর নিচে। এ নিয়ে তাই প্রশ্ন ওঠে প্রায়ই।

ক্যারিয়ারের শুরুতে তামিম ছিলেন অত্যন্ত দুর্ধর্ষ এক ব্যাটসম্যান। ২০০৭ বিশ্বকাপে ডাউন দ্য উইকেটে এসে জহির খানকে তার মারা ছক্কার কথা নিশ্চয় এখনো ভুলেননি সেই ম্যাচের দর্শকরা। কিন্তু সময় যতো এগিয়েছে, তামিম যেনো ততোই ঢুকে গেছেন খোলসে।

ক্যারিয়ারের ১০ বছর পার করে আসার পর তামিমকে দেখা যাচ্ছে আর দশজন ব্যাটসম্যানের মতোই। যার ব্যাটে দুর্দান্ত সব শট আছে ঠিক, কিন্তু তা দেখা যায় কম। তার কাছে বিনোদনদায়ী ব্যাটিংয়ের প্রত্যাশা এখন যেনো করাই যায় না। তামিম এখন খেলেন রয়েসয়ে। তার এমন ধীর-স্থির ব্যাটিং সমালোচনায় কুড়ায় প্রায়ই।

কিন্তু তামিম কেনো এতোটা ধীরে খেলেন? তার স্ট্রাইকরেটই বা ৮০-এর নিচে কেনো? সম্প্রতি এমন প্রশ্নের উত্তর তামিম নিজেই দিয়েছেন। ক্রিকেট বিষয়ক আন্তর্জাতিক একটি সংবাদ মাধ্যমকে সম্প্রতি সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সেখানেই উঠে আসে তার স্ট্রাইকরেটের ধীরগতির বিষয়টি।

তামিম বলেন, 'বেশির ভাগ সময় আমি খেলি মিরপুর অথবা দেশেরই কোনো ভেন্যুতে। আমাদের দেশে দ্রুত রান করা সহজ কথা নয়। মিরপুরে এখনো ২৬০-২৭০ রান হলেই ওয়ানডে জেতা যায়। অথচ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই এই রান জেতার জন্য যথেষ্ট নয়।'

তামিমের মতো, দলে তার যে ভূমিকা পালন করতে হয়, তা করতে গিয়ে স্ট্রাইক রেট বাড়ানো তার জন্য কঠিন। তিনি বলেন, 'আমাকে দলের মূল ব্যাটসম্যানের ভূমিকা পালন করতে হয়। যে কারণে আমি কিছুটা হলেও নিরাপদ ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করি এবং সেই সাথে স্ট্রাইকরেটের দিকেও খেয়াল রাখি। আপাতত এই ভূমিকায় নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছি। এই কাজে সফল হওয়া কেবল একটা রাতের ব্যাপার নয়। আমি যদি কাজটা ঠিকভাবে করতে পারি, তাহলে তা দলের জন্যই ভালো। তবে এটা ঠিক যে স্ট্রাইকরেট যদি আরো একটু বাড়াতে পারি, সব কিছু আরো ভালো হবে।'

স্ট্রাইকরেট বাড়াতে গিয়ে নিজের স্বাভাবিক খেলা ও বর্তমান দায়িত্বে অবহেলা করতে চান না তামিম। তিনি বলেন, 'আমি এখন যেভাবে ব্যাটিং করছি, এটা আসলে আমার ব্যাটিংয়ের সহজাত ধরন নয়। কয়েক বছরের চেষ্টা এবং লব্ধ অভিজ্ঞতায় কিছু জিনিস আমাকে মানিয়ে নিতে হয়েছে। একই সাথে দল থেকে আমাকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সেটাও পালন করার প্রয়োজন আছে।'

টি-টোয়েন্টিতে শুরু থেকে আক্রমণে গেলেও ওয়ানডেতে তামিমকে দেখা যায় প্রথম ২০ বলে তেমন কোনো ঝুঁকিই নেন না। তামিম দাবি করলেন, এই ব্যাপারটা তিনি ইচ্ছে করেই করেন। কারণ তিনি মনে করেন, প্রথম ২০-৩০টি বল খেলা হয়ে গেলে, তার স্কোরিংয়ের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়।