অসহ্য ব্যথা ছিলো মুশফিকের পাঁজরেও...

সাহস, ত্যাগ আর হার না মানা অবিশ্বাস্য আত্মবিশ্বাসের দারুণ উদাহরণ হয়ে থাকলো এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের গতকালের ম্যাচ। ডুবো ডুবো অবস্থা থেকে দলকে বাঁচাতে মুশফিক-মিঠুনের দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া, দলকে একটা শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাঙ্গা কবজি নিয়ে তামিম ইকবালের মাঠে নামা, এরপর এক হাতে ব্যাট করা আর শেষে মুশফিকের ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রান -সবই যেনো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ একটি 'টিম বাংলাদেশ'-এর কথা মনে করিয়ে দেয়।

গতকালের ম্যাচে তামিমের ওই আত্মত্যাগ সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে। ক্রিকেটবিশ্বে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ। অথচ ঠিক এমন একটি আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারতেন মুশফিক নিজেও। ম্যাচের দিন সকাল থেকেই পাঁজরে ব্যথার কথা জানাচ্ছিলেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার।

একটা সময় পাঁজরে ব্যথা নিয়ে মুশফিকের খেলাই অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়ালো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। কিন্তু এরপর মূল একাদশে জায়গা পেয়ে শুধু মাঠেই নামলেন না, বরং কাঁধে তুলে নিতে হলো ষোলো কোটি মানুষের প্রত্যাশা।

চার নম্বরে ব্যাট করতে নামার কথা। ব্যাটিং অর্ডার দেখে মনে হচ্ছে যেনো, খেলার মাঝামাঝি সময়ে নামতে হবে এ ব্যাটসম্যানকে। কিন্তু তামিমের ব্যথা পাওয়া আর দুই ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতায় মুশফিককে নামতে হলে প্রথম ওভার শেষেই। এ যেনো অনেকটা ম্যাচ ওপেনিং!

এরপরের কাহিনী অবশ্য ইতিহাস। সকালেই টের পাওয়া পাঁজরের ব্যথাকে উপেক্ষা করে খেলে গেলেন ১৪৪ রানের এক মহাকাব্যিক ইনিংস। নিজের ক্যারিয়ার সেরাও বটে। বাংলাদেশের ইনিংসের ৩০০ বলের ১৫০টিই খেলে দিয়েছেন তিনি। ভাবা যায়!

এই সেঞ্চুরির মধ্য দিয়ে এশিয়া কাপেই মুশফিকের দুটি সেঞ্চুরি হয়ে গেলো।

এর মধ্যে যে ব্যথা তাকে কাবু করতে চায়নি, তা কিন্তু নয়। খেলার মাঝে মাঝেই পাঁজরের অসহ্য ব্যথায় বুক চেপে ধরছিলেন মুশফিক। আরব আমিরাতের ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রার অসহ্য গরমে ঘেমেনেয়ে একাকার মুশফিকের যন্ত্রণাকাতর মুখ প্রায়ই ভেসে উঠছিলো টিভির পর্দায়। তবু হাল না ছেড়ে একাই টেনে নিয়ে গেছেন বাংলাদেশের তরী।

যা করার প্রথম ইনিংসেই করে দিয়েছিলেন। ব্যথার যন্ত্রণায় পরের ইনিংসে আর উইকেটের পিছনে দাঁড়াতে পারেননি তিনি। লিটন দাসের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বিশ্রামে থেকেছেন। তারপরও ম্যাচসেরার পুরস্কারটা মুশফিককে ঠিকই চিনে নিয়েছে।