নিষ্প্রাণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৭৩

সুপার ফোরের শুরুতে যে ‘সুপার পারফর্ম্যান্সের’ আশা ছিলো বাংলাদেশের, ভারতের বিপক্ষে শুক্রবারের ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষ সে আশা অনেকটাই শেষ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ করতে পেরেছে মোটে ১৭৩ রান। ভারতের মতো দলের জন্য এই রান টপকে যাওয়া কোনো ঘটনাই হওয়ার কথা নয়।

গত কয়েক ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও বাংলাদেশের টপ অর্ডার ছিলো পুরোপুরি ব্যর্থ। ওপেনাররা বলার মতো কিছুই করতে পারেননি। পরের দিকে সাকিব-মুশফিকও ছিলেন নিজেদের ছায়া হয়ে। নিশ্চিত ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখ থেকে বাংলাদেশকে কিছুটা হলেও রক্ষা করেছে অষ্টম উইকেটে মাশরাফি-মিরাজের ৬৬ রানের জুটি।

বাংলাদেশ ৬৫ রানের মধ্যে হারায় পাঁচ উইকেট। তামিম ইকবালের দীর্ঘ মেয়াদের ওপেনিং সঙ্গী হওয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন লিটন দাস, তা বড় এক ধাক্কাই খায়। পরপর দুই ম্যাচে এক অংকের রানে বিদায় নেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে কিছু করতে ব্যর্থ হওয়া লিটন ভারতের বিপক্ষে আউট হন মাত্র সাত রানে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ সিরিজের টি-টোয়েন্টিতে দারুণ একটি ইনিংস খেলে ওয়ানডেতে ফেরার দাবি জোরালো করেন লিটন। অন্য দিকে এনামুল হক বিজয় ও ইমরুল কায়েসও ছিলেন ব্যর্থ। যা লিটনের সামনে ওয়ানডে দলে জায়গা পাকা করার সুযোগ সৃষ্টি করে। কিন্তু পরপর দুই সুযোগে লিটন করতে পারলেন না কিছুই।

এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে সুযোগ পান নাজমুল হোসেন শান্তও। এক দিন আগেই তার অভিষেক হয়। কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি ২০ বছর বয়সী বাঁহাতি ওপেনার। ভারতের বিপক্ষেও ব্যর্থ হন তিনি।

সুপার ফোরের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাত্র ১৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। পঞ্চম ও ষষ্ঠ ওভারে দুই ওপেনার বিদায় নেন। এ দিকে, এই ম্যাচ দিয়ে বিশ্রাম শেষে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম ও মোস্তাফিজুর রহমান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ দুজন অনুপস্থিত ছিলেন।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর তৃতীয় উইকেটে ২৬ রানের জুটি গড়েন সাকিব ও মুশফিক। কিন্তু প্রাথমিক ধাক্কা সামলানোর জন্য তা মোটেই যথেষ্ট ছিলো না। দারুণ কিছুর আভাস দিয়েও সাকিব আউট হন মাত্র ১৭ রানে।

আউট হওয়ার আগের দুই বলে বাউন্ডারি মারেন সাকিব। রবিন্দ্র জাদেজার পরের বলে স্কয়ার লেগে শিখর ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। অথচ ঠিক ওই বলটার আগেই স্কয়ার লেগে শিখরকে আনা হয়। সাকিব যেনো ওই দিক দিয়ে খেলার চ্যালেঞ্জই নেন!

সাকিবের এভাবে উইকেট বিলিয়ে দেয়ার কিছুক্ষণ মধ্যে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুন এবং এরপর অহেতুক বিলাসী রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। ৬৫ রানের মধ্যে বাংলাদেশ হারিয়ে বসে পাঁচ উইকেট।

ষষ্ঠ উইকেটে ৩৬ রান যোগ করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। কিন্তু ১০১ রানের মাথায় বিদায় নেন দুজনই। মাহমুদুল্লাহ এলবিডব্লিউ হন জাসপ্রিট বুমরাহর বলে আর মোসাদ্দেক বিদায় নেন জাদেজার চতুর্থ শিকার হয়ে। এক বছর ওয়ানডে দলে ফেরা জাদেজা তুলে নেন চারটি উইকেট।

নিশ্চিত বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে অষ্টম উইকেটে ৬৬ রান যোগ করেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মেহেদি হাসান মিরাজ। মাশরাফি ২৬ রানের মাথায় আউট হন ভুবনেশ্বর কুমারের বলে আউট হন। মিরাজ ফেরেন ৪২ রান করে। এ দুজনের ব্যাটেই মূলত বিপর্যয়ের পরিমাণ কমায় বাংলাদেশ। দুই রানের ব্যবধানে আউট হন মাশরাফি ও মিরাজ।

ভারতের হয়ে ভুবনেশ্বর কুমার, জাসপ্রিট বুমরাহ তিনটি করে উইকেট নেন। এক বছর পর ওয়ানডে দলে ফেরা রবিন্দ্র জাদেজা নিয়েছেন চার উইকেট।