তামিম কী, তাহলে বুঝা গেল এবার!

তামিম ইকবাল অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের মূল স্তম্ভ। শুরুর দিকে অপরপ্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলে একপ্রান্ত যেন আগলে রাখতে পারেন সেই দায়িত্ব থাকে তামিমের কাঁধে, আবার অপর প্রান্ত থেকে ভালো খেললে নিজে তার সহজাত ক্রিকেটটা খেলে যেন দলের রান তাড়াতাড়ি বাড়িয়ে নিতে পারেন সেই দায়িত্বও তামিমের।

ভালো শুরু পেলে মিডল অর্ডারের অভিজ্ঞদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ইনিংস বড় করার দায়িত্ব থাকে তামিমের কাঁধে। আবার শুরুটা খারাপ হলে মিডল অর্ডারের অভিজ্ঞদের সঙ্গে যোগ দিয়ে যেন দলকে টেনে তোলা হয় সেই দায়িত্ব তামিমের। মোট কথা গত দেড়, দুই বছরে তামিমকে ঘিরেই বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস পরিচালনা হচ্ছে। তামিম কতো দারুণভাবে সেই কাজটা সামলাতেন তার পরিষ্কার ধারণা মিলছে চলতি এশিয়া কাপে।

তামিমহীন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র চার বল খেলতে পেরেছেন, তারপরও ম্যাচের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র তামিম। ওই শ্রীলঙ্কার ম্যাচেই কব্জিতে চোট পাওয়া তামিম এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেছেন। তাকে ছাড়া খেলতে নেমে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১৫ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি।

আফগানদের বিপক্ষে একপ্রান্ত থেকে যখন নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়ছিল তখন অন্যপ্রান্তে কেউ যে দাঁড়িয়ে ধস ঠেকাবেন সেটা হয়নি। তামিম এই ধস ঠেকানোর কাজ ইদানিং নিয়মিত করে আসছিলেন। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচেও সেই একই হাল। ওপেনিং জুটি ভাঙল ১৫ রানের মাথায়। স্টেডিয়ামের সব দর্শক নিজ নিজ সিটে বসার আগেই বিদায় নেন দুই ওপেনার। মিডল অর্ডারও ব্যর্থ। যাতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ১৭৩ রানেই অলআউট! এই ছোট টার্গেট পরে খুব সহজেই পেরিয়ে যায় ভারত। গত দুই ম্যাচে বোঝা গেছে, তামিম আসলে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের কতো বড় স্তম্ভ।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল এই ব্যাটসম্যানের পরিসংখ্যানও একই কথা বলছে। সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে তামিমের ব্যাটিং গড় ৩৬.২৪। কিন্তু শুধু চলতি বছরের হিসেবে গড়টা নব্বইয়েরও বেশি! ইনজুরিতে পড়ার আগে চলতি বছর ৯ ম্যাচ খেলে ৫৪১ রান করেছেন তামিম, গড় ৯০.১৬! সেঞ্চুরি আছে দুটি, হাফ সেঞ্চুরি ৪টি।

তার আগের বছরসহ অর্থাৎ ২০১৭ ও ২০১৮ সালের হিসেব ধরলেও তামিমের গড় প্রায় পচাত্তর! ২০১৭ ও ২০১৮ সাল মিলিয়ে মোট ২০টি ওয়ানডে খেলে তামিম রান করেছেন ১১৮৭, গড় ৭৪.১৮। সেঞ্চুরি চারটি, হাফ সেঞ্চুরি ৮টি। যে কারো ক্ষেত্রেই এই পারফরম্যান্স ঈর্ষা জাগানিয়া!