একেই বোধহয় জাদুকরি ফুটবল বলে! প্রবল চাপ না হলে যেনো মেসি ঠিক জ্বলে উঠতে পারেন না! বাছাই পর্বেই যখন আর্জেন্টিনা বাদ পড়ে যাচ্ছিলো, তখন জ্বলে উঠেছিলেন মেসি। আবার বিশ্বকাপে এসে যখন আর্জেন্টিনার বাদ পড়ার উপক্রম, তখন আবার জ্বলে উঠলেন সেই মেসিই! তার জাদুকরি ফুটবলের সঙ্গে যোগ হলো মার্কোস রোহোর চিতার ক্ষিপ্রতা, যোগ হয় হ্যাভিয়ের মাশচেরানোর পাহাড়ের দৃঢ়তা এবং নাইজেরিয়া তাতেই কাটা পড়লো ২-১ গোলের হারে।

roho scored as argentina beats nigeria

এই ম্যাচে জিতলেই শুধু হতো না। অন্য ম্যাচে অপরাজিত থাকতো হতো ক্রোয়েশিয়াকেও। সেখানে তারা অপরাজিত তো থাকলোই, বরং আইসল্যান্ডকে হারালো ২-১ গোলের ব্যবধানে। যাতে কেটে গেলো আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠার সব বাধা। নানা অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা পিছনে ফেলে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠা আর্জেন্টিনা শেষ ১৬তে মুখোমুখি হবে ফ্রান্সের।

বাঁচা-মরার ম্যাচের ১৪তম মিনিটেই লিড পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। প্রথম দুই ম্যাচে গোল না করতে পেরে তুমুল সমালোচনার শিকার হওয়া মেসি এ দিন শুরু থেকেই ছিলেন সজাগ। যার ফল ম্যাচের শুরুর দিকেই পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এভার বানেগা দ্রুত গতির এক উড়ন্ত পাস দেন নাইজিরিয়ার ডি বক্সের দিকে দৌড়াতে থাকা মেসির দিকে।

lionel messi scored in first half against nigeria

অসাধারণ দক্ষতায় বল রিসিভ করে নিজের তুলনামূলক ‘দুর্বল’ ডান পায়ে অসাধারণ এক গোল করেন মেসি। এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। যা রাশিয়া বিশ্বকাপের শততম গোল।

প্রথমার্ধে আর কোনো দল গোলের দেখা পায়নি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে জ্বলে উঠে আফ্রিকান ঈগলসরা। তারা ম্যাচের ৫১ মিনিটে গিয়ে গোলটি পরিশোধ করে। আর্জেন্টিনার ডি বক্সে লিওন বালোগানকে ফাউল করে বসেন মাশচেরানো। রেফারি বাজিয়ে দেন পেনাল্টির বাঁশি। সুযোগ পেয়ে গোল করতে মোটেও ভুল করেননি ভিক্টোর মোসেস।

নাইজেরিয়া সমতায় ফেরার পর আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় আর্জেন্টিনা। ৬১তম মিনিটে হোর্হে সাম্পাওলি মাঠে নামান ক্রিশ্চিয়ান পাভনকে। উঠিয়ে নেয়া হয় এনজো পেরেজকে। নেমেই অসাধারণ এক আক্রমণ করে বসেন পাভন। কিন্তু নাইজেরিয়ার এক ডিফেন্ডার কর্নার করে বাঁচান দলকে।

ম্যাচের যখন এই অবস্থান, অন্য ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার দেয়া এক গোল ফিরিয়ে দেয় আইসল্যান্ড। ফলে আর্জেন্টিনার উপর বাড়তে থাকে চাপ। এই চাপ যখন আকাশের সমান ভারি হয়ে উঠছে, তখনই অসাধারণ এক সুযোগ পেয়ে যান হিগুইয়েন। ৮১ মিনিটে পাওয়া সুযোগটি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন তিনি। বল তুলে দেন নাইজেরিয়ার গোলবারের উপর দিয়ে। আর্জেন্টিনা যেনো তখনই মিস করে বিশ্বকাপের পরবর্তী ধাপ।

এর মধ্যে আবার আগুয়েরোকে নামিয়ে দেন হোর্হে সাম্পাওলি। জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে আর্জেন্টিনা। কিন্তু কিছুতেই ধরা দিচ্ছিলো না কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। সময় যতো গড়াচ্ছিলো ততোই যেনো বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাচ্ছিলেন মেসিরা।

৮৬তম মিনিটে গিয়ে গ্যাব্রিয়ে মারকেডো অসাধারণ এক ক্রস বাড়ান নাইজেরিয়ার গোলবারের দিকে এগোতে থাকা মার্কোস রোহোর দিকে। বলটা পায়ে পাওয়া মাত্র সজোরে এক শট মেরে দেন তিনি। যা কাঁপিয়ে দেয় নাইজেরিয়ার জাল। দ্বিতীয় গোলে ২-১ গোলের জয় নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। অন্য ম্যাচে ২-১ গোলে আইসল্যান্ডকে হারায় ক্রোয়েশিয়া, যা আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় রাউন্ডও নিশ্চিত করে।

এই ম্যাচটা নানা রকম সমীকরণ নিয়ে শুরু করে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া। জিতলেই পরের পর্বের হাতছানি ছিলো নাইজেরিয়ার সামনে। আর্জেন্টিনার সামনেও তাই, যদি একই সময়ে শুরু হওয়া অন্য ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া অপরাজিত থাকে। আর নাইজেরিয়ার জন্য ড্রও যথেষ্ট হতো, যদি ক্রোয়েশিয়া-আইসল্যান্ডের ম্যাচটাও ড্র হতো। মানে দুই দলকেই তাকিয়ে থাকতে হয়েছে গ্রুপের অন্য দুই দলের ম্যাচের দিকে।

আইসল্যান্ডের সঙ্গে জেতা দল নিয়েই এই ম্যাচটা খেলতে নামে নাইজেরিয়া। এই ম্যাচে নাইজেরিয়ার মূল ভরসা ছিলেন আবু মুসা ও কেলেছি ইহিয়ানাচো। আর্জেন্টিনার ডিফেন্স এলোমেলো করতে তাদের উপরই ভরসা রাখেন নাইজেরিয়ার কোচ। নাইজেরিয়ার এই ম্যাচের একাদশে ছিলেন ব্রায়ান ইডুও। যার জন্ম আবার সেন্ট পিটার্সবার্গেই। অর্থাৎ ম্যাচটা তিনি খেললেন নিজের জন্মভূমিতে।

ক্রোয়েশিয়ার কাছে হারা ম্যাচের একাদশে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। গোলরক্ষক উইলি কাবায়েরোর সঙ্গে বাদ পড়েন ফরোয়ার্ড আগুয়েরোও। তার সঙ্গে বাদ পড়তে হয় সালভিও, আকুয়ানা ও মেজাকে। তাদের বদলে ঢোকেন ফ্রাঙ্ক আরমানি, এভার বানেগা, মার্কোস রোহো, ডি মারিয়া ও গঞ্জালো হিগুইয়েন। এদের মধ্যে এই ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফ্রাঙ্ক আরমানির অভিষেক হলো।

এবারের আগে, গত তিন বিশ্বকাপেই মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া এবং প্রতিটি আসরে অন্তত এক গোলের ব্যবধানে জিতেছে আর্জেন্টিনা। এবারের ম্যাচের শুরুতে সেই ইতিহাস মেসিদের দারুণ জ্বালানি হিসেবে কাজ করেছে।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.