রাতে জার্মানি-কোরিয়া লড়াই

আর কয়েকটা সেকেন্ড পার হলেই হয়তো অঘটনটা ঘটে যেতো। সুইডেন ম্যাচেই বিদায়ঘণ্টা বেজে যেতো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানির। নাটকীয় ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ফ্রি-কিক থেকে দুর্দান্ত এক গোল করে জার্মানদের স্বপ্নটা বাঁচিয়ে রেখেছেন টনি ক্রুস।

এই জার্মানি এখন আবারো শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্ন দেখছে। স্বপ্ন পূরণ অবশ্য অনেক দূরের পথ। আপাতত আরো একবার টিকে থাকার লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে জার্মানদের। আজ দক্ষিণ কোরিয়াকে হারালে জোয়াকিম লোর দল উঠে যেতে পারে দ্বিতীয় রাউন্ডে।

জিতলেও জার্মানদের নক আউট পর্বে যাওয়াটা সম্ভাবনার পর্যায়ে থাকার কারণ মৃত্যুকূপ খ্যাত ‘এফ’ গ্রুপের সমীকরণ। এই সমীকরণ এতটাই জটিল যে, রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচ জিতেও একমাত্র দল হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে পারেনি মেক্সিকো।

তাই আজ জার্মানিকে শুধু জিতলেই চলবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে মেক্সিকো-সুইডেন ম্যাচের ফলের দিকে। কারণ সুইডেন জিতে গেলে সমীকরণের মারপ্যাচে বাদ পড়া লাগতে পারে তাদের। তাই যতটা সম্ভব বড় জয়টাই চ্যাম্পিয়নদের জন্য শ্রেয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সুইডেন, জার্মানি দুই দল জিতলে কী হবে? তখন মেক্সিকো, জার্মানি এবং সুইডেন তিন দলেরই পয়েন্ট হবে সমান ছয়। এ ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে তিন দলের গোল ব্যবধান।

শেষ ম্যাচে জার্মানি এবং সুইডেন ড্র করলে কিংবা দুই দলই হারলে তাদের পয়েন্ট হবে সমান চার। সেক্ষেত্রে গোল ব্যবধান দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট বন্টনের প্রক্রিয়া হতে পারে। এখানেও ব্যবধান সমান হলে কার্ড হয়ে উঠতে পারে ফ্যাক্টর। সেক্ষেত্রে কপাল পুড়বে জার্মানির। সুইডেন ম্যাচে জেরমি বোয়াটেংয়ের লাল কার্ডটা কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে তাদের জন্য।

সাদা চোখে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে দক্ষিণ কোরিয়ার। কিন্তু কাগজে-কলমের হিসেবে এখনো আাশা আছে এশিয়ার দলটি। কোরিয়া-ই এই বিশ্বকাপের একমাত্র দল যারা দুই ম্যাচ হারের পরও এখন পর্যন্ত বিদায় নেয়নি। আজ জার্মানিকে বিশাল ব্যবধানে হারালে এবং মেক্সিকো টানা তৃতীয় ম্যাচে জিতলে কোরিয়ার জন্য একটা পথ খুলে যেতে পারে।

আসলে দুর্দান্ত জার্মানির বিপক্ষে কোরিয়ার জয়ের আশা করাটা আকাশ কুসুমের মতো ব্যাপার। তাই এশিয়ার দলটিকে নক আউট পর্বের দৌড়ে অন্য সবার চেয়ে পিছিয়ে রাখা হচ্ছে। এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আবার ইনজুরির কারণে খেলতে পারছেন না কোরিয়া অধিনায়ক কি সুং-ইয়েং।

জার্মানি-কোরিয়া লড়াইয়ের ফল যাই হোক তাকিয়ে থাকতে হবে গ্রুপের অন্য ম্যাচের দিকে। কাজান স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় জার্মানি-কোরিয়া ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে যে কোনো দুটি চ্যানেল তথা- বিটিভি, মাছরাঙা, নাগরিক টিভি, সনি সিক্স কিংবা সনি টেন ২।

টিকে থাকার লড়াইয়ের আগে দুই রকমের সংবাদ পেয়েছে জার্মানি। আজ খেলতে পারবেন না আগের ম্যাচ রক্তাক্ত হয়ে মাঠ ছাড়া মিডফিল্ডার সেবাস্টেইন রুদি। সুইডেন ম্যাচে লাল কার্ড দেখার কারণে এ ম্যাচে আবার জার্মানরা দলে পাবে না বোয়াটেংয়ে।

জার্মানির জন্য স্বস্তির খবরও আছে। চোট কাটিয়ে ফিট হয়ে উঠেছেন প্রধান ডিফেন্ডার ম্যাট হ্যামেলস। এ কারণেই হয়তো নিষেধাজ্ঞা ও ইনজুরি নিয়ে ভাবছেন না জার্মানি কোচ লো। ম্যাচের আগে তিনি বলেছেন, ‘যারা খেলতে পারবে না তাদেরকে এ ম্যাচে আমাদের দরকার ছিল। তবে আমাদের হাতে অনেক বিকল্প আছে।’

গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে জার্মানিকে আশা দেখাচ্ছে বিশ্বকাপে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে সুস্মৃতি। দুইবারের দেখায় দুবারই এশিয়ার দলটিকে হারিয়েছে জার্মানরা। তবে এটাও মাথায় রাখা দরকার- শেষবারের সাক্ষাতে (২০০৪ সালে) জার্মানিকে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া।