ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ কতোদিন ঠেকানো যাবে?

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার শপথের দিনে এটাই হতে পারতো বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমের সবচেয়ে বড় খবর। কিন্তু তা হচ্ছে কই? ট্রাম্পের শপথের দিনে তো আরো খবরের জন্ম দিলো ওয়াশিংটন।

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন যতো মানুষ, তার চেয়ে বেশি মানুষ ছিলেন ট্রাম্প- বিরোধী বিক্ষোভে। ওয়াশিংটন প্রশাসনকে এ দিন ২৮ হাজার পুলিশ নিয়োগ করতে হয়েছে কেবল বিক্ষোভকারীদের সামলাতেই। বিশ্ব গণমাধ্যমের খবরে দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। তাদেরকে লাঠিপেটা করি সরিয়ে দিতে হয়েছে। কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছুড়ে দেয়া হয়েছে পানি।

গত নভেম্বরে ট্রাম্প যখন হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন, তখনই জেগে উঠেছিলো অনেকগুলো প্রশ্ন। আরো বড় একটি প্রশ্ন সামনে এলো ট্রাম্পের শপথের দিন— কতোদিন ঠেকিয়ে রাখা যাবে এই বিক্ষোভ?

এটা আগেই জানা গেছে যে, ট্রাম্প হিলারির চেয়ে কম ভোট পেয়েও নির্বাচিত হয়ে গেছেন। বিভ্রান্তিকার ইলেক্টোরাল ভোটই মূলত নিশ্চিত করেছে ট্রাম্পের জয়। তখন থেকেই আমেরিকার জনগণের ঘৃণার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন ট্রাম্প। তাকে নিয়ে আমেরিকানদের অসন্তোষ অবশ্য আরো আগে থেকেই ছিলো।

নারীদের নিয়ে ট্রাম্পের একাধিক মন্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে তার বিকৃত মানসিকতা। আমেরিকার নতুন প্রজন্ম কিছুতেই ওই রকম মানসিকতার একজনকে তাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে চায়নি। কিন্তু আমেরিকার জনগণের চাওয়ার প্রতিফলন তাদের ‘সিস্টেমে’ প্রকাশ পায়নি।

আমেরিকার জনগণ তাদের ক্ষোভের বড় একটা প্রকাশ ঘটানোর জন্য বেছে নিয়েছিলো ট্রাম্পের শপথের দিনটাকে। বিক্ষোভকারীরা আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলো যে, তারা কখনোই ট্রাম্পকে ‘শান্তিতে’ শপথ নিতে দিবেন না।

আপাতত দৃষ্টিতে ট্রাম্পের শপথ শেষ হয়েছে শান্তিতেই। নিরাপত্তার কঠিন ব্যুহ পেরিয়ে কোনো বিক্ষোভকারী ঢুকতে পারেননি ক্যাপিটল হিলে; যেখানে শপথ নিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু ক্যাপিটল হিলের বাইরেই অবস্থান নিয়েছিলেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। শপথে অংশ নিতে আগ্রহী অনেককে ক্যাপিটল হিলে প্রবেশ না করার জন্যও অনুপ্রাণিত করেছেন তারা।

সব মিলিয়ে ট্রাম্প তার জীবনের সবচেয়ে ঝঞ্চাবিক্ষুব্ধ সময়ে প্রবেশ করলেন, এটা আর না বললেও হয়। একই সঙ্গে আমেরিকাও সম্ভবত অশান্ত হয়ে উঠার পথে পা রাখলো। তবে এই ‘অশান্ত’ হওয়াটা বাইরের কোনো দেশের হস্তক্ষেপে নয়, বরং আমেরিকা অশান্ত হয়ে উঠতে পারে গৃহবিবাদের ফলে। ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার সবচেয়ে বড় যে শঙ্কা জেগে উঠেছিলো, সেটা এই অশান্ত হওয়াটাই।