ভারতের দীর্ঘতম সেতুর নির্মাণব্যয় মাত্র ২০৫৬ কোটি রূপি

গত শুক্রবার ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ সেতুর উদ্বোধন করেন। ৯.২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুটি উত্তর-পূর্ব আসামে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত হয়েছে।

‘ঢোলা সাদিয়া’ নামের এই সেতুটিকে বলা হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে জনগণের জন্য উপহার। নির্বাচনী ইশতেহারে এই সেতু নির্মাণ প্রকল্প মোদি সরকারের অন্যতম ওয়াদা ছিলো।

এই সেতু নির্মাণব্যয় ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ভারত ও বাংলাদেশ দুটি দেশ পাশাপাশি হলেও দুই দেশের সেতু নির্মাণব্যয়ের পার্থক্য একেবারে চোখে লাগার মতো।

ভারতের পত্রপত্রিকা জানাচ্ছে, ৯.২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুটি নির্মাণে ভারতের ব্যয় হয়েছে ২০৫৬ কোটি রূপি। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৫৬৫ কোটি টাকার কিছু বেশি।

অপরদিকে ঠিক একই সময়ে বাংলাদেশে নির্মাণ হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু। প্রথমে ২০ হাজার কোটি টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও গত বছর এ প্রকল্পে নতুন করে আরও ৮ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়। সর্বশেষ এ সেতু নির্মাণে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুটি ভারতের ঢোলা সাদিয়া নামক দীর্ঘ সেতুটির চেয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার ছোট। তারপরও এটি নির্মাণে ঢোলা সাদিয়ার চেয়ে প্রায় এগারো গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। ঠিক এই বিষয়টিই গত দুদিনে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের প্রধান আলোচনায় পরিণত হয়েছে।

ফেসবুকেই কেউ কেউ প্রতিবেশি দুটি দেশের মধ্যে সেতু নির্মাণব্যয়ের এই বিশাল পরিমাণ পার্থক্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন। সেই সাথে পদ্মা সেতু নির্মাণে সচ্ছতার সাথে অর্থব্যয় ও সঠিক তদারকির দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ভারতের ঢোলা সাদিয়া সেতু মুম্বাইয়ের বিখ্যাত দীর্ঘতম বান্দা-ওরলি সিলিঙ্ক সেতুর চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি লম্বা। ব্রহ্মপূত্রের উপনদী লোহিত নদীর ওপর নির্মিত এই ঢোলা সেতুটির সামরিক দিক থেকে ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। এই সেতুর ফলে চীন সীমান্তের অরুণাচল প্রদেশে ৬০ টন ওজনের যুদ্ধট্যাংক নিয়ে দ্রুত ও সহজেই পৌঁছাতে সক্ষম হবে ভারতীয় সেনাবাহিনী।