রোহিঙ্গাদের যে ৮টি ছবি কাঁপিয়ে দিতে পারে পুরো বিশ্বকে...
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনী অভিযানের নামে যে জঘন্য ও ঘৃণ্যতম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তা জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও মতবাদ নির্বিশেষে বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। গত এক বছরে দুই দফায় চলা এই ‘জাতিগত নিধন’ অভিযানে শত শত রোহিঙ্গাকে জীবন্ত পুড়ে মারার অভিযোগ রয়েছে।
অনেক রোহিঙ্গাই জানিয়েছেন কীভাবে দেশটির সেনা সদস্যরা মায়ের কোল থেকে শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে আছড়ে মেরেছে, গর্ভের সন্তানকে পেট চিরে বের করেছে। নির্যাতনের ধরণ যে কতোটা নিকৃষ্ট ও বিকৃত হতে পারে তার প্রমাণ বহন করছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। ডয়েচ ভেলের এক প্রতিবেদনে ছবিতে ছবিতে উঠে এসেছে তারই খণ্ড চিত্র।
হঠাৎ সেনারা ঘরে ঢুকে মূল্যবান সব জিনিসপত্র বের করে দিতে বলেছিল। কিন্তু দেওয়ার মতো কিছুই ছিল না হতদরিদ্র মমতাজের ঘরে। আর এই কথা নিজ দেশের সেনাবাহিনীকে জানালে দৈত্যরূপ ধারণ করে সেনারা বলেছিল, ‘কিছুই যদি দিতে না পারো তবে আমরা তোমাকে হত্যা করবো।’ এই বলে, সৈন্যরা মমতাজকে ঘরে বন্দি করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। জলন্ত বাড়ি থেকে কোনমতে বের হতে পারে মমতাজ। কিন্তু বের হয়ে দেখেন তার তিন ছেলেকে মেরে ঘরের উঠোনে ফেলে রেখে গেছে দৈত্যগুলো। আর মেয়েটাকে প্রচণ্ড প্রহার করায় তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্ত ঝরছে।
ঘরের ভেতরেই লুকিয়ে ছিল নূর কামাল। সেখান থেকে তাকে খুঁজে বের করে সৈন্যরা প্রথমে রাইফেলের বাট আর পরে ছুরি দিয়ে মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাত করে। আর সেই আঘাতের চিহ্ণই আজীবনের ক্ষত সৃষ্টি করেছে ১৭ বছরের এই কিশোরের মনে।
ঘুম তখন গভীর। হঠাৎ চারপাশে আগুনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন আনোয়ারা। এমন সময় পুড়ে যাওয়া ঘরের ছাদ তার মাথায় ভেঙে পড়ে। ফলে শরীরে থাকা নাইলনের কাপড় গলে পুড়ে যায় তার হাত। রয়টার্সকে আনোয়ারা জানিয়েছে, ‘আমি বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, মরে যাবো। কিন্তু আমার সন্তানদের জন্য বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছি।’
ব্যান্ডেজে মোড়ানো তুলতুলে ছোট্ট এই দু’টো দেখলেই মন কেঁদে ওঠে। শহিদের বয়স মাত্র এক বছর৷মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হামলা থেকে বাঁচতে দাদি তাহেরা যখন প্রাণপনে ছুটছিলেন, তখন তার কোল থেকে পড়ে যায় ছোট্ট শিশুটি। ছবিটি কক্সবাজারে রেডক্রসের এক হাসপাতালে ২৮ অক্টোবর তোলা।
রাখাইনের মংদুতে কালাবারোদের গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয় সেনাবাহিনীর লোক। জীবন্ত পুড়ে মরে তার স্বামী, মেয়ে ও এক ছেলে। তার ডান পায়ে প্রচণ্ড আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যান তিনি। আর যেখানে পড়ে গিয়েছিলেন সেখানেই কয়েক ঘণ্টা মারা যাওয়ার ভান করে অবশেষে শুধু নিজেই প্রাণে বাঁচেন কালাবারো।
তারা নয় ভাই-বোন। সেনারা তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলে বাকি আটজন ঠিকই বের হয়ে যেতে পারে কিন্তু আগুনের মধ্যে আটকা পড়ে ছোট সেতারা। আর আটক থাকা অবস্থায় তার পা ভয়াবহভাবে পুড়ে যায়। এই অবস্থায় সে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে পৌঁছায় এবং এখানেই তার চিকিৎসা করা হয়। বর্তমানে তার দুই পা থাকলেও নেই কোন আঙুল।
মাদ্রাসায় পড়িয়ে ফেরার পথে তিন ব্যক্তি ছুরি নিয়ে ইমাম হোসেনের উপর হামলা করে। আর তার পরেরদিনই স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গ্রামের অন্যদের সঙ্গে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন তিনি। পরে নিজেও অনুপ্রবেশ করে কক্সবাজারে পৌঁছান।
গ্রামের বাড়িতে এক বিস্ফোরণে শরীরের এই অবস্থা হয় জাবাইরের। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমি বেশ কয়েক সপ্তাহ চোখে কিছুই দেখতে পাইনি। ভেবেছিলাম সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে গিয়েছি। কক্সবাজারের এক সরকারি হাসপাতালে ২৩ দিন চিকিৎসাধীন থেকে একটু স্বাভাবিক হতে পেরেছি।’
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.
360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.
Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.