আপনি পড়ছেন

ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের পর দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। তার দেয়া বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন। এছাড়া আনন্দবাজার পত্রিকা ও নিউইয়র্ক টাইমসসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেশটির বিশিষ্টজনেরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এছাড়া ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে সমালোচনা ঝড় বইছে।

bipin rawat chief army of india

বুধবার একটি সেমিনারে অংশ নিয়ে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেছিলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে প্রবেশ করাচ্ছে পাকিস্তান। এর মাধ্যমে তারা প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছে। আর এতে সহায়তা করছে চীন। এছাড়া আসামের রাজনৈতিক দল এআইইউডিএফ নিয়েও তীর্যক মন্তব্য করেন তিনি।

চীন ও পাকিস্তানের বিষয়ে বক্তব্যের কারণে নয় বরং বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে এনে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়ায় তিনি খোদ ভারতীয়দের কাছেই এখন সমালোচনার পাত্র। বিশেষ করে দেশটির উদীয়মান একটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে তার এ ধরণের বক্তব্য কেউ প্রত্যাশা করেনি। তার দেয়া বক্তব্যকে অনেকেই দেশটির রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর নাক গলানোর ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন।

পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এ নিয়ে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই লেখায় বলা হয়, সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিক পদ্ধতির বিষয়ে কোনো ধরনের নাক গলালে ফলাফল যে ইতিবাচক হয় না, ভারতের পশ্চিমের ও পূর্বের প্রতিবেশীরা তার সাক্ষ্য বহন করছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি লিখেন, নিজেদের জন্য নির্দিষ্ট সীমারেখার কথা খেয়াল রাখলে কোনো প্রতিকূলতা সুসংহত রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কোনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে না। এক্ষেত্রে ভারত একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত সে সত্য উপলব্ধি করেছেন কি না এ প্রশ্ন রাখেন।

রাজনৈতিক দলের বিপক্ষে সরাসরি সেনাপ্রধানের বক্তব্যের বিরোধিতা করে আনন্দবাজারের সম্পাদকীয়তে আরও উল্লেখ করা হয়, একের পর এক সামরিক অভ্যুত্থানের ধাক্কা সামলাতে সামলাতে ক্লান্ত পাকিস্তান ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র। কিন্তু এই দুই দেশের মাঝে ভারতের চিত্রটা বরাবরই অন্য রকম। দিন যতই গিয়েছে, ভারতে গণতন্ত্রের ভীত ততই মজবুত হয়েছে।

আলোচিত মুসলিম ধারার রাজনৈতিক দল সম্পর্কে আনন্দবাজারের সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়, ‘এআইইউডিএফ দলটির জনভিত্তি কীভাবে বেড়েছে, কতটা অস্বাভাবিক গতিতে বেড়েছে— বিশ্লেষণ করেছেন ভারতের সেনাপ্রধান। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করার অধিকার সেনাপ্রধানের নিশ্চয়ই রয়েছে। কিন্তু সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত এবং নির্বাচন কমিশন স্বীকৃত একটি রাজনৈতিক দলকে এভাবে সরাসরি বিচার করার অধিকার সামরিক বাহিনীর প্রধানের নেই। অন্য যে দেশেই থাক, ভারতে অন্তত নেই।’

সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে নাক গলানো গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে ইঙ্গিত দিয়ে আনন্দবাজারের সম্পাদকীয়তে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘জেনারেল বিপিন রাওয়াত যদি অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যটা বুঝেশুনেই করে থাকেন, যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিজের অধিকারের সীমালঙ্ঘন করে থাকেন, তাহলে বিপদ আরও বেশি। কারণ সামরিক বাহিনীর কর্তারা (ভারতে) কখনও নিজেদের সাংবিধানিক অধিকারের বাইরে গিয়ে সক্রিয়তা দেখানোর চেষ্টা করেননি।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় জেনারেল রাওয়াতের এই আচরণকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করে লিখেন, সেনাপ্রধানের এই অতি সক্রিয়তা গণতন্ত্রের পক্ষে কোনও সুলক্ষণও নয়।

এ বিষয়ে কলকাতার দুমকাল কলেজছাত্র সারোয়ার মন্তব্য, বিপিন একজন সন্ত্রাসবাদী। উনি দেশের সেনাপ্রধান থাকার সময়ই সব চেয়ে বেশি কাশ্মিরসহ, চীন সীমান্তে উস্কানিমূলক মন্তবের কারণে যুদ্ধে জড়িয়ে আমাদের কত মায়ের বীর জওয়ান (BSF) শহীদ হয়েছেন। উনি পাকিস্তানের মতো সামরিক ক্ষমতায়নের চেষ্টায় ব্রত আছেন ।

পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাহুল চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত বিজেপির টিকিটে জিতে মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এই বক্কাবাজ। তাই বিজেপি এই লোককে দিয়ে কথা বলিয়ে নিচ্ছে।’

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.