এবার রাশিয়ার অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র চায় ইরাক!

নিজেদের আকাশসীমার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রাশিয়া থেকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কিনতে চায় ইরাক। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত এ দেশটি রাশিয়া থেকে বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র ক্রয়েরও পরিকল্পনা করছে। এমনটাই জানিয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম তাস (TASS)।

রাশিয়া ও ইরাকের আন্তঃসরকারের বাণিজ্য, অর্থনৈতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহায়তার জন্য দুই দেশের মধ্যে এক বিশেষ বৈঠকের পর মঙ্গলবার ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম আল-জাফরি জানান, বাগদাদ এখন এস-৪০০ কিনতে আগ্রহী। তবে এ বিষয়ে সবার সঙ্গে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আর ইরাক পুনর্গঠন ও নিজেদের সামর্থ্য আরও বাড়াতে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম আল-জাফরি বলেন, আজ আমরা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেকোনো ধরণের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

এদিকে রাশিয়ায় নিযুক্ত ইরাকের রাষ্ট্রদূত হায়দার মনসুর হাদি সাংবাদিকদের বলেন, মস্কোতে রাশিয়া-ইরাকের আন্তঃসরকার কমিশনের ওই বৈঠকে ‍এস-৪০০ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য ইরাকের কোনো প্রতিনিধি দলও মস্কোতে অবস্থান করছে না। যখন ইরাক সরকার এস-৪০০ কেনার সিদ্ধান্ত নেবে তখন অবশ্যই তা সবাইকে জানানো হবে।

এদিকে ইরাকি সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্রাটেজি সেন্টারের পরিচালক মুয়াতাজ মাহি আবদেল হামিদ রাশিয়ার বার্তা সংস্থা স্পুটনিককে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ২০০৩ সালের আগ্রাসনের পর আমরা যে পশ্চিমা সামরিক নীতি শুরু করেছি তাতে প্রমাণ হয়েছে যে, পশ্চিমা অস্ত্র তেমন কার্যকরী নয় এবং সামিরক অভিযানের সময় পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে পারে না।

ইরাকের উচ্চপদস্থ এ কর্মকর্তা আরো বলেন, আঞ্চলিক বেশ কিছু দেশ চায় না যে, ইরাক সামরিক দিক দিয়ে শক্তিশালী হোক। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের কিছু দেশ চায় ইরাক মার্কিন নিয়ন্ত্রণাধীন থাকুক। আর যুক্তরাষ্ট্র চায় না ইরাক রাশিয়া থেকে এস-৪০০ কিনুক; বরং তারা চায় বাগদাদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বর্তমান চুক্তির আওতায় ইরাকের সমরাস্ত্র থাকতে হবে।

প্রসঙ্গত, এ বছরের শুরুতে চীনের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী এস-৪০০ সরবরাহ করা শুরু করেছে রাশিয়া। ২০১৪ সালের চুক্তি অনুযায়ী অত্যাধুনিক এ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের প্রথম চালান চীনে পৌঁছেছে। ইতিমধ্যে মস্কো এস-৪০০ পরিচালনার জন্য চীনা সামরিক বাহিনীর একটি প্রকৌশলী দলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তবে চুক্তি অনুযায়ী, এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উৎপাদন করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, চীনই প্রথম দেশ যারা রাশিয়ার কাছ থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ক্রয় করেছে। দ্বিতীয় ক্রেতা হিসেবে রয়েছে তুরস্ক। 

এদিকে ওই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয়ের আগ্রহ প্রকাশ করেছে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব। গত বছরের অক্টোবরে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ রাশিয়া সফরের সময় এস-৪০০ কেনার বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।