ইরানকে ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি

ঐতিহাসিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যকার সম্পর্কটি মধুর নয়। সাম্প্রতিক সময়ে পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এই দুই দেশের সাংঘর্ষিক সম্পর্কটি বিশ্ববাসীর সামনে ফের এসেছে। এবার ইরানের ওপর ‘ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন’ নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, 'ইরান তাদের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ করা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করা এবং প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা বন্ধ করাসহ মার্কিন সব দাবি মেনে না নিলে তাদের ঐতিহাসিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হবে।' ৮ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় দুই দেশের সাংঘর্ষিক অবস্থান স্পষ্ট হলো।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর পম্পেও তার প্রথম বৈদেশিক নীতি বিষয়ক ভাষণে দেশটির স্থানীয় সময় সোমবার ইরানকে নিষেধাজ্ঞার এই হুমকি দেন। পম্পেও বলেন, 'ইরানের শাসকরা দেশের জনগণ এবং দেশের জন্য অগ্রহণযোগ্য এবং নিস্ফল পথ বেছে নিয়েছে। এমন অবস্থায় নিষেধাজ্ঞাগুলো কেবল তাদের যন্ত্রণাই বাড়াবে।'

তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, 'আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো হবে ইতিহাসে আমাদের আরোপ করা এ যাবৎকালের সবচেয়ে কঠিনতম নিষেধাজ্ঞা। এগুলো কার্যকর হলে ইরানকে তাদের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হবে।'

পম্পেও বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে ইরানে প্রভাব বিস্তারের নীতি ধারণ করে আসছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে ইরানি তৎপরতার অবশ্যই মূলোৎপাটন করবে এবং তাদের দোসরদের কঠোরভাবে নির্মূল করতে হবে। ইরানকে অবশ্যই সিরিয়া থেকে তাদের বাহিনীও সরিয়ে আনতে হবে।'

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দাবির কাছে মাথা নত করার আদৌ কোন সম্ভাবনা নেই ইরানের। পম্পেও বলেন, 'ইরানের সব ধরনের আক্রমণ প্রতিহত করতে পেন্টাগন এবং আরব মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ অব্যহত রাখতে হবে।' তবে তিনি বলেন, 'ওয়াশিংটনের যখন মনে হবে ইরান তাদের নীতিতে পরিবর্তন এনেছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিবে।'

নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জোর দিয়ে পম্পেও বলেন, 'আমরা অবশ্যই ইরানের উপর নজিরবিহীন অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখব। বিষয়টি এমনভাবে মোকাবিলা করা হবে যেন, ইরান ভবিষ্যতে আর কখনোই মধ্যপ্রাচ্যকে চাপে ফেলার মত স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।'

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়ে বিশ্ববাজার হারাতে হতে আশঙ্কা পারে, এমন আশঙ্কা করছে ইরানের অনেক প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য তাদের নিষেধাজ্ঞায় ইউরোপের মিত্রদের সহায়তা পাওয়ার আশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, মিশর, ভারত, জাপান, জর্ডান, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থন করবে বলে মনে করছে ট্রাম্প প্রশাসন।