কাজের চাপে মারা যাচ্ছে লোকজন, দুশ্চিন্তায় সরকার

ওভারটাইম ও কাজের চাপের পাশাপাশি পর্যাপ্ত অবসরের অভাবে মারা যাচ্ছে জাপানি শ্রমিক-কর্মচারীরা। এমন কি আত্মহত্যা পর্যন্ত করছে অনেকে। এজন্য ভারসাম্য আনতে মাসের প্রথম সোমবার সকালে ছুটি উপভোগের ব্যবস্থা করছে দেশটির সরকার।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ সময় কাজ করার কারণে হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দেয়। কাজের চাপে মৃত্যু হলে জাপানি ভাষায় ‘কারোশি’ বলা হয়। এর অর্থ অতিরিক্ত পরিশ্রমে মৃত্যু।

সরকারি তথ্যমতে, ২০১৭ সালে কারোশিতে আক্রান্ত হয়ে ২৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা দ্বিগুণের মতো। এ ছাড়া ‘কারোজিসাৎসু’ বা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে ওই বছর আরো ২৩৬ জন আত্মহত্যা করেছেন।

এবিষয়ে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী সাওয়াকো শিরাহাসে বলেন, ‘এটি জাপানের দীর্ঘ দিনের এক সমস্যা। এ সব সমস্যার মূলে রয়েছে করপোরেট সংস্কৃতি ও কাজের ধারা। এটি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে সরকার।’

এমন অবস্থায় জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয় ‘শাইনিং মানডে’ নাম একটি প্রস্তাবের পরিকল্পনা করছে। এতে ওভারটাইম কমানো, কাজের সুবিধা বাড়ানো এবং অবসরের মধ্যে ভারসাম্য আনার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

এর আগে গত বছর ‘প্রিমিয়াম ফ্রাইডে’ নামে এ ধরনের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর আওতায় প্রতি শুক্রবার বিকাল ৩টার মধ্যে অফিস ছুটি হচ্ছে এবং কর্মীদের ওই সময়ে বেড়ানোর জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।

এক জরিপের বরাত দিয়ে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, ৩০ শতাংশ কর্মীকে সোমবার সকালে ছুটি দিয়ে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে করপোরেট জগতের জন্য নতুন এ প্রস্তাব তৈরি করছে সরকার। তবে এটি মানা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না।

শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে চরম উদ্বেগে রয়েছে জাপান সরকার। এজন্যই কাজের সময় কমানোর পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে গ্রহণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১০ হাজার কর্মচারীর ওপর একটি জরিপ চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, প্রতিমাসে ২০ শতাংশ কর্মচারী ৮০ ঘণ্টা ওভারটাইম করেছেন। অতিরিক্ত কাজের কারণে মৃত্যুর হার বাড়ছে।