এবার ছবি নিয়ে রাজনীতিতে পুতিন!

শক্ত হাতেই দেশ পরিচালনা করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে ধরে রেখেছেন বিশ্বের লৌহমানবের খেতাবও। দেশ পরিচালনার ফাঁকে পুরনো দিনের নানা শখ মেটাতে ছুটে যান নানান জায়গায়। সেই মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দী করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়েন, বেশ সাড়াও পান। এবার সেই ছবিগুলো নিয়ে রীতিমত রাজনীতিতে নেমেছেন তিনি। ভক্ত সমর্থক দিয়ে ২০১৯ নববর্ষের ক্যালেন্ডারে সেই ছবিগুলো ছাপিয়েছেন। যেখানে পুতিনকে তুলে ধরা হয়েছে শক্তিশালী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে। ইতিমধ্যেই ক্যালেন্ডারের লাখখানেক কপি বিক্রিও হয়েছে।

ক্যালেন্ডারে পুতিন খালি গায়ে মাছ শিকার করছেন, পশু পাখির সঙ্গে খেলছেন, ঘোড়ায় সওয়ার করছেন, পিস্তল হাতে পোজ দিয়েছেন এমন সব ছবি ছাপানো হয়েছে। পুতিনের সমর্থকরা বলছেন, আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এটা ভালো আইডিয়া। এক রাশিয়ান নারী বলছিলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট অনেক দেশের প্রেসিডেন্টের চেয়ে শক্তিশালী ও চৌকস। দেশের জনগণও তাকে ভালোবাসেন। তাই তার ছবি সম্বলিত ক্যালেন্ডার মানুষ কিনছে।’

বিভিন্ন সময়ই পুতিনের বিভিন্ন ভঙ্গি ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। কখনো ঘোড়া সওয়ারি, কখনো স্ক্যুবা ডাইভার হয়ে, কখনো মাছ শিকারির বেশে, কখনো বা গোয়েন্দা অফিসার বেশে। দেশটির গবেষক ফিওনা হিল ও কিলফোর্ড গ্যাডি দ্য টেলিগ্রাফে লিখেছেন, ‘পুতিন ক্রেমলিন পরিচালনা করলেও তার মাঝে এখনও তারুণ্য ভরপুর।’ তিনি আরো লেখেন, ‘তিনি পলিটিক্যাল আর্টিস্ট’।

কিন্তু গণমাধ্যমগুলো সমালোচনা করে বলছে, পুতিন তার জনপ্রিয়তা বাড়াতে এই পন্থা অবলম্বন করেছেন। ছবিগুলো তার অফিসের কর্মকর্তাদের দিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে যুবসমাজের সমর্থন কুঁড়াতে চাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে ২০১৯ নববর্ষের ক্যালেন্ডার তৈরি। যার দাম ধরা হয়েছে ১২শ টাকা।

এখানেই শেষ নয়, প্রচারণার অংশ হিসেবে মগ, টি-শার্টসহ গিফট সামগ্রীতে পুতিনের ছবি এঁকে বিক্রি করা হচ্ছে। 

পুতিনের পুরো নাম ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন। দেশটির লেনিনগ্রাদের এক সাধারণ পরিবারে ১৯৫২ সলে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কর্মজীবনে রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির সদস্য থেকে সংস্থার প্রধান হয়েছিলেন। এরপর নাম লেখান রাজনীতিতে। ১৯৯৯ সালে পুতিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে রুশ প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ২০০৪ সালে পুতিন ২য় মেয়াদে পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

সাংবিধানিক কারণে যেহেতু টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না, তাই ২০০৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে উত্তরসূরী দিমিত্রি মেদভেদেভকে প্রার্থী করেন, বিজয়ীও হন মেদভেদেভ। আর পুতিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকেন। এরপর ২০১২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৩য় মেয়াদে জয়লাভ করেন। ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও ছয় বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন পুতিন।