যৌন হামলা ঠেকাবে এই অভিনব জ্যাকেট

যৌন হামলা ও হয়রানি থেকে নারীকে রক্ষা করতে বিশেষ ধরনের জ্যাকেট উদ্ভাবন করেছেন মেক্সিকোর চারজন শিক্ষার্থী। জ্যাকেট পরা অবস্থায় কোনো নারী আক্রান্ত হলে এটির হাতায় থাকা বৈদ্যুতিক শক্তি থেকে হামলাকারীর গায়ে শক লাগবে। ‘ওমেন ওয়েরাবেল’ নামের এই জ্যাকেটটি পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হয়েছে।

উদ্ভাবকরা বলছেন, মেক্সিকোতে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় যৌন হামলা প্রতিরোধক এই জ্যাকেট তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানি ঠেকানো সম্ভব হবে। তবে জ্যাকেটের বৈদ্যুতিক শকের তীব্রতা যথেষ্ট কম। ফলে এটিকে কোনো ধরনের অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা যাবে না।

দেশটির পুয়েবলা শহরে মন্টেরি ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড হায়ার এডুকেশনে পড়াশোনা করা চার শিক্ষার্থী এ জামাটি তৈরি করেছেন। তারা প্রকৌশল, আইন ও রোবটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী। ক্লাসে পরীক্ষামূলক কাজের অংশ হিসেবে নতুন বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে এটি উদ্ভাবন করা হয়েছে।

পারা কুইরোজ নামের একজন উদ্ভাবক বলেন, ‘কাছের অনেক নারীর মুখে বিভিন্ন ধরনের যৌন হামলার কথা শুনেছি। এ ধরনের কিছু ঘটনার ওপর গবেষণা করে আমরা এই জ্যাকেটটি তৈরি করেছি। এটি সম্পূর্ণ নতুন ধারণা।

জ্যাকেটের সার্কিটের নকশা প্রস্তুতকারী গিওয়ান পার্ক জানান, এটি স্বাভাবিকভাবে গায়ে পরা থাকলে নারীর চলাফেরায় কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। কারণ, নির্দিষ্ট সুইচটি না টেপা পর্যন্ত বিদ্যুৎ চালু বা বন্ধ হবে না। সিগনাল বোঝার জন্য একটি এলইডি বাতিও আছে। লাইট জ্বলে উঠলে বুঝা যাবে এটি নিজেকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

এ অবস্থায় কেউ জ্যাকেটের হাতা স্পর্শ করলেই ইলেকট্রোড সার্কিটটি বন্ধ হয়ে যাবে এবং স্পর্শকারীর গায়ে বিদ্যুতের শক লাগবে। এসময় শক লাগা ব্যক্তি হতভম্ব হয়ে পড়বেন এবং তা বুঝতে পেরে নির্যাতিত নারী দৌড়ে পালাতে সক্ষম হবেন। এছাড়া কোনো নারী আক্রান্ত হলে তার আশেপাশের লোকজনকে জানানো সম্ভব হবে।

জ্যাকেটটি পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করতে তিন মাসের মতো সময় লেগেছে। তবে এটিকে পরবর্তীতে আরো উন্নত করার কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে সেন্সর বসানো এবং হাতা ছাড়া জ্যাকেটের অন্যান্য অংশেও ইলেকট্রোড বসানোর পরিকল্পনা করছেন তারা।

এই ‘আত্মরক্ষার হাতিয়ার’কে আইনের দৃষ্টিতে অস্ত্র হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন শিক্ষার্থী গুয়াদালোপ মার্তিনেজ। এতে বৈদ্যুতিক শকের মাত্রা কম হওয়ায় জীবনের উপর হুমকি তৈরি হবে না।

সব ঠিকঠাক থাকলে খুব শিগগিরই এই জ্যাকেট বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের কথা ভাবা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানান, এটির বিক্রয় মূল্য হতে পারে প্রায় ৫০ ডলার।