স্ক্রিন টিভি, মিনি ফ্রিজ, এটাচড বাথ, জিম- কী নেই এই কারাগারে!

অন্যায় করলে শাস্তি তো পেতেই হবে। আর শাস্তিভোগের জায়গা হচ্ছে কারাগার। কারগার যে সুখের জায়গা নয় তা তো আমরা জানিই। ছোট কুঠুরির এক দিকে বাথরুম আর সারা কামড়া দুর্গন্ধময়। খাবারও যাচ্ছেতাই। তাই সাধ করে নিশ্চয়ই কেউ জেলে যেতে চাইবেন না।

তবে কারাগার যদি হয় ফাইভ স্টার মানের হোটেলের মতো বিলাসবহুল তবে ভিন্ন কথা। যেখানে যন্ত্রণার বদলে শুধু আরামে থাকবেন আর খাবেন মজাদার সুস্বাদু খাবার, সেখানে আপনি যেতে চাইতেই পারেন তা যদি জেলখানাও হয়।

কারাগার বলতে আমরা যা বুঝি নরওয়ের 'হ্যাল্ডেন জেল' তার সম্পূর্ণ বিপরীত। ২০১০ সালে নির্মিত এই সংশোধনাগারটিতে কারাবন্দিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ বিনোদনের সকল ব্যবস্থাই বিদ্যমান। খেলাধুলা, গানবাজনা থেকে শুরু করে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কয়েদীরা অংশগ্রহন করেন। ছোট ছোট সুন্দর সাজানো ঘর, জানালার বাইরে বিরাট সবুজ লন, নানা রঙের ফুল মন ভরিয়ে দেবে।

এখানকার বন্দিরা নিজেরাই ফল, সবজি চাষ করে। নিজেরা বাজার করে রান্না করে। এক সঙ্গে বসে খাওয়া ও টেলিভিশন দেখার সুযোগও আছে তাদের। ডেনমার্ক ও বৃটেনের আর্কিটেক্ট দ্বারা এই কারা ভবন ইট, স্টিল ও লার্চ কাঠে তৈরি।

এখানে স্টিল কঠোরতা আর লার্চ কোমলতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বার্চ ব্লুবেরি পাইন গাছের সারি কারাগারের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। এছাড়াও কারাগারের দেয়াল ও টয়লেটের দরজার সৌন্দর্য ধরে রেখেছে গ্র্যাফিতি পেইন্টিং, যা নরওয়ের আর্টিস্ট দ্বারা করানো।

১১০ স্কয়ার ফুটের প্রতি রুমে আছে ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি, মিনি ফ্রিজ, এটাচড বাথ, শাওয়ার। প্রতি ১২টি কামড়ায় একটি করে ডাইনিং, রান্নাঘর ও লিভিং রুম। স্টিলের বাসন থেকে পোর্সেলিনের প্লেট সবই আছে সেখানে।

এছাড়া আছে ভিডিও গেমের ব্যবস্থাও। আবার ফুটবল, জিম, ক্লাইম্বিং, বই, ম্যাগাজিন, সিডি, ডিভিডি সব পাওয়া যাবে এই কারাগারে। তবে বন্দিদের ১২ ঘন্টা রুমে থাকতে হবে বাকি সময় বাইরে।

এই বিলাসী আয়োজনের কারণ জানতে চাইলে কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাউকে মানুষ হিসেবে সম্মান দিলে তার কিছুটা হলেও ফেরত পাওয়া যায়। এটা জীবনের পরবর্তী ধাপে বন্দিরা কাজে লাগাতে পারেন।