ম্যালেরিয়ার স্থায়ী চিকিৎসায় বাজারে আসলো যুগান্তকারী ওষুধ

প্রতি বছর প্রায় ৮৫ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। দেখা যায় একই ব্যক্তি একাধিকবার এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। অনেক সময় প্রাথমিকভাবে সেরে উঠলেও সম্পূর্ণভাবে এটি রোগীকে ছেড়ে যায় না। এই সুপ্ত ম্যালেরিয়াকে তাড়াতে বাজারে আসলো যুগান্তকারী ওষুধ।

গত ৬০ বছরের মধ্যে এ ধরনের একটি ওষুধ অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এফডিএ। ‘টাফেনোকোয়াইন’ নামের এই ওষুধকে ‘অসাধারণ অর্জন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। খবর: বিবিসি।

দেখা গেছে, এক ধরনের ম্যালেরিয়া থেকে পরিপূর্ণভাবে সেরে উঠা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠে। এটা লিভারের মধ্যে সুপ্ত থাকে এবং বার বার ফিরে আসে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এই ওষুধ ব্যবহার করা যাবে কিনা এজন্য মুখিয়ে আছে ওষুধ কর্তৃপক্ষ।

সাব-সাহারান আফ্রিকার বাইরে প্যারাসাইট প্লাজমোডিয়াম ভিভেক্স- নামে এক ধরনের ম্যালেরিয়া আছে। শিশুরা এর ঝুঁকিতে বেশি থাকে। আক্রান্ত শিশুরা দুর্বল হতে থাকে এবং প্রায়শই স্কুলে অনুপস্থিত থাকে।

এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞাতসারেই আবার এই রোগ ছড়ানোর কেন্দ্রে পরিণত হয়। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ম্যালেরিয়া সুপ্ত থাকে। আর তাকে কামড়ানোর পর ওই মশাটি আরেকজনকে কামড় দিলে তখন তার মধ্যেও এটি সংক্রমিত হয়। এজন্য এই রোগ একেবারে নির্মূল করা সম্ভব হয় না।

আক্রান্ত ব্যক্তির লিভারে সুপ্ত থাকা এই প্যারাসাইট সারাতে এফডিএ যুক্তরাষ্ট্রে ‘টাফেনোকোয়াইন’ নামের ওষুধটির অনুমোদন দিয়েছে এফডিএ। এতে করে রোগটি আক্রান্তের শরীরে আর ফিরে আসবে না। আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিক অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে ‘টাফেনোকায়াইন’ সেবন করা যাবে।

অবশ্য লিভারে সুপ্ত থাকা প্যারাসাইট সারাতে বর্তমানে বাজারে ‘প্রাইমাকোয়াইন’ নামের একটি ওষুধ পাওয়া যায়। কিন্তু যেখানে ‘টাফেনোকোয়াইন’ এক ডোজে এটি সারবে, সেক্ষেত্রে ‘প্রাইমাকোয়াইন’ সেবন করতে হয় ১৪ দিন।

এফডিএ বলেছে, এই ওষুধটি কার্যকর এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারের জন্য এটা অনুমোদন দিয়েছে। তবে সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন আছে। কারণ, এর বেশকিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।

যাদের এনজাইম সমস্যা আছে, তাদের এই ওষুধ সেবন করা উচিত হবে না। এতে রক্তস্বল্পতার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সেবনের আগে এনজাইম পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। মানসিক অসুস্থতা আছে এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার ডোজে সমস্যা দেখা দিতে পারে।