আপনি পড়ছেন

২০২২ সাল একটি স্মৃতিময় পরিবর্তনের বছর। এ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। ৭০ বছর রাজত্ব করার পর ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ৯৬ বছর বয়সে মারা যান। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। চীন ও ইরানে সরকারবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। বিশ্বের বেশিরভাগ মনোযোগ ছিল সংকটপূর্ণ ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় সশস্ত্র সংঘাত। পারমাণবিক যুদ্ধের শঙ্কা আরও বেড়েছে। ফরেন পলিসির পাঠকপ্রিয় কয়েকটি খবর তুলে ধরা হলো:

our most read stories of 2022রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজেজ দুদা, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, চেচেন নেতা কাদিরভ, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (ছবিতে বাম থেকে ডানে)

পুতিন সম্পর্কে পশ্চিমারা ভুলে আক্রান্ত:
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের প্রায় চার মাস পরে রাজনৈতিক বিশ্লেষক তাতিয়ানা স্ট্যানোভায়া পুতিনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে নতুন তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেছিলেন, সামরিক বিজয় অর্জনে রাশিয়ার অক্ষমতা মস্কোতে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে অনুভূত হয়। পুতিনের বিরুদ্ধে সফলতা চাইলে পশ্চিমকে পরিস্থিতিকে ভিন্নভাবে দেখতে হবে। স্তানোভায়া পুতিনের নেতৃত্ব সম্পর্কে কয়েকটি অনুমানকে উড়িয়ে দেন। তার মতে, রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট জানেন- তিনি ইউক্রেনে ব্যর্থ হচ্ছেন। রাশিয়া ও পশ্চিম উভয়ই বিশ্বাস করছে যে, তাদের প্রতিপক্ষ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সবই নিজেদের পক্ষে আছে। এমন ধারণার কারণে বছরের পর বছর ধরে সংঘাত চলতে পারে।

পোল্যান্ডকে কৌশলগত খেলোয়াড়ে পরিণত করে যুদ্ধ:
ইউক্রেনের প্রতিবেশীরা সময়ের আগেই সম্ভাব্য যুদ্ধ মোকাবেলায় প্রস্তুত হতে শুরু করে। সাংবাদিক মিশাল ক্রানজ লিখেছিলেন, রুশ হামলার আগেই পোল্যান্ড আশঙ্কা করেছিল এক মিলিয়ন পর্যন্ত উদ্বাস্তু দেশটিতে ঢুকতে পারে। তিনি সম্ভাব্য সাইবার হামলাসহ ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন লেখায়। ইউক্রেন যুদ্ধ পোলিশ নেতাদের গভীরভাবে প্রভাবিত করবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তার এই আশঙ্কা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সত্য হতে শুরু করে। ক্রানজ উপসংহারে বলেছিলেন, নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ইউক্রেন যুদ্ধ সহজেই এই অঞ্চলকে ছাড়বে না।

চেচেন সৈন্যদের ছবি দেখিয়ে ইউক্রেনকে ভয় দেখানোর চেষ্টা:
রাশিয়া কিয়েভ দখলের প্রাথমিক চেষ্টা করে। কিন্তু তা ব্যর্থ হওয়ার পর কিয়েভের বিরুদ্ধে নৃশংসতার সম্ভাব্য চিত্র রুশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতে থাকে। চেচেন যোদ্ধাদের ছবি দেখিয়ে কিয়েভে আতঙ্ক ছড়ানোর পাশাপাশি কিয়েভকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করার চেষ্টা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন করেন সাংবাদিক জাস্টিন লিং। সেখানে বলা হয়, চেচেন নেতা কাদিরভ আগ্রাসনের আগেই ইউক্রেনকে সংযুক্ত করার পক্ষে ছিলেন এবং তিনি যুদ্ধে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য নানা আহ্বান জানান। তবে মস্কোর প্রপাগাণ্ডা শেষপর্যন্ত ভাল ফল দেয়নি।

ওয়াশিংটনকে রাশিয়া ও চীন উভয়ের সাথে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে:
কলামিস্ট ম্যাথিউ ক্রোয়েনিগের একটি প্রতিবেদন পাঠক লুফে নেয়। তিনি লেখেন, সময় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রকে একইসাথে রাশিয়া ও চীনের সাথে যুদ্ধে প্রস্তুতি নেওয়ার। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে হবে এবং ইন্দো-প্যাসিফিকে চীন প্রধান প্রতিপক্ষ। এজন্য তিনি কয়েকটি যুক্তি দেন। সেগুলো হলো, প্রতিরক্ষা কৌশল নির্মাণ, প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি এবং চীন-রাশিয়ার ঐক্য শক্তিশালী হওয়ার বিষয়টি মাথায় নিয়ে প্রতিরোধের পরিকল্পনা করা। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় হুমকি চীনও।

ঘুমের মধ্যে হাঁটছে পশ্চিমারা:
রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার ঠিক আগে ফরেন পলিসির কলামিস্ট স্টিফেন এম ওয়াল্ট পুতিনের বিরুদ্ধে এককভাবে অভিযোগ তোলেন। তিনি যুক্তি দেন রাশিয়াকে ছাড় দেওয়া উচিত নয় ওয়াশিংটনের। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্লিপওয়াকিংয়ে (ঘুমের মধ্যে হাঁটা) ভুগছে। চুপ থাকার গোঁড়ামি অতীতে মার্কিন নেতাদের বিপথে নিয়ে গেছে। এতে খারাপ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে, যা ইউক্রেন ও বৃহত্তর মার্কিন স্বার্থের জন্য আরও ক্ষতিকর। যুদ্ধের আগেই তার এই মন্তব্য ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়।

হু জিনতাওয়ের সাথে কী ঘটেছে:
চীনের ক্ষমতাসীন ২০তম পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় গত অক্টোবরে। এই কংগ্রেসে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) নেতা হিসেবে অভূতপূর্ব তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। পার্টি কংগ্রেস প্রতি পাঁচ বছরে একবার হয়। কিন্তু এবার একটি বিরল ও মর্মান্তিক লাইভ ঘটনা দেখা যায়। ফরেন পলিসির জেমস পামার ব্যাখ্যা করেন, স্টাফরা হঠাৎ করে সাবেক সিসিপি নেতা হু জিনতাওকে বাইরে নিয়ে যান। অধিবেশনের চূড়ান্ত ভোটের আগে এটা করা হয়। সবচেয়ে বিরক্তিকর বিষয় হলো, ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল। শি ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে অপমান করেছিলেন।

বিপর্যস্ত হচ্ছে রাশিয়ান অর্থনীতি:
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে কিছু বিশ্লেষক যুক্তি দিয়েছিলেন যে, পুতিনের শাসনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো কোনো প্রভাব ফেলেনি। ফরেন পলিসির একটি খবরে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ায় মূলত ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলেছে। ক্রেমলিনের বাইরে থেকে তা উপলব্ধি করা যায়নি। এই খবরটিও পাঠক লুফে নেয়।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.