রোগ ধরা পড়লেই কি আতঙ্কিত হবেন?

সুস্থ-সুন্দর জীবনের প্রত্যাশী আমরা সবাই। ভাল থাকতে, ভাল রাখতে আমরা কত কিছুই না করি। কিন্তু এত কিছুর পরও হঠাৎ হঠাৎ বিপর্যয় নেমে আসে জীবনে। হতে পারে তা এক্সিডেন্ট কিংবা কোন কঠিন অসুখ-বিসুখ। নিজের হোক কিংবা নিকটজনের, মারাত্মক কোন রোগ ধরা পড়লে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি আমরা। এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর। আর এই আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে জড়িয়ে থাকে একটি পরিবার। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পরিবারের ওপরেও পড়ে। এই অজানা আতঙ্কে অনেক সময় সময়ের আগেই প্রিয়জনের মৃত্যুও ঘটতে পারে। চিকিৎসকও অনেক সময় দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, কিভাবে এই চরম সত্যিটা জানাবেন রোগী কিংবা তার পরিবারকে?

এই ধরনের অবস্থায় প্রিয়জনটির পাশে থেকে সাহস দেয়া, কঠিন পরিস্থিতিতে তাকে সামলানো অনেকটাই চ্যালেঞ্জের। কিভাবে এই কঠিন সময়ে পাশে থেকে সামলাবেন তার ছোট একটি দিক নির্দেশনা দেয়া হল।

আতঙ্ক এক ধরণের সাধারণ মানসিক অনুভূতি। আসলে অজানা ভয় থেকে আতঙ্ক তৈরি হয়। আতঙ্ককে অবহেলা নয়। দীর্ঘদিন আতঙ্কে থাকতে থাকতে ভুক্তভোগী এক সময় হতাশ হয়ে ভেঙ্গে পড়েন। কেউ কেউ অসহায় ভাবতে শুরু করেন নিজেকে। এক্ষেত্রে রোগীর মনোবল পুনরায় ফেরাতে পারবেন এক মাত্র চিকিৎসকই। প্রথমেই উচিত চিকিৎসাধীন ডাক্তার কিংবা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা। খেয়াল রাখবেন যাতে খুঁটিনাটি কিছু বাদ না যায়। সব খুলে বলতে হবে।

আতঙ্কিত হয়ে পড়ার ব্যাপারটি দু’ভাবে প্রকাশ পেতে পারে। কখনও ধীরে ধীরে দীর্ঘ সময় ধরে, আবার হঠাৎ তীব্রভাবে এর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এ সময় তাই রোগীর দিকে আলাদাভাবে নজর দিন। রোগীর মধ্যে যদি হুট করে বুকে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, বুক কাঁপা, ধুকপুকানি বেড়ে যাওয়া, দম আটকে আসা, মাথা ঘুরানো, পেটে ব্যথা, শীতল অনুভূতি, ঘেমে যাওয়া, হঠাৎ খুব ভয় লাগা কিংবা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, সবকিছু ঝাপসা দেখা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, চারপাশের পরিবেশ থেকে নিজেকে আলাদা ভাবা, বুক জ্বালা করা, রুচিতে পরিবর্তন ইত্যাদি লক্ষণগুলো দেখতে পান তবে দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। আর অল্পতেই ক্লান্তি, অনিদ্রা, অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, বিরক্তি, মনোযোগ দিতে না পারা, পেশিতে ব্যথা ইত্যাদি হল দীর্ঘকালীন আতঙ্কের লক্ষণ।

মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হলে দুশ্চিন্তা হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু এই দুশ্চিন্তা আতঙ্কে রূপ নিলেই বিপদ। কখন বুঝবেন দুশ্চিন্তা আতঙ্কে রূপ নিয়েছে? এটি বুঝতে হলে সময় এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হবে। যদি বিষয়টি নিজের কিংবা প্রিয়জনের প্রতিদিনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলে, বুঝে নিতে হবে বিষয়টি গুরুতর। সুতরাং বিপদের সময়ে প্রিয়জনকে রাখুন একদম চোখে চোখে। মানসিকভাবে তাকে সহযোগিতা করুন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

নাক ডাকা বন্ধ করবে একটিমাত্র জুস!

বাঁধাকপির ভালো-খারাপ দিক

গুণে ভরা কমলার রস ও খোসা, যা না জানলেই নয়

ঘৃতকুমারীর আশ্চর্য ব্যবহার

সমীক্ষা: রাতের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে স্মার্টফোন