আইএমএফের সুপারিশ বাস্তবায়নে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশ

ঋণের জন্য আইএমএফের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা সরকারের উপনীত সমঝোতা বাস্তবায়নে একটি প্রস্তাব পাশ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। আইএমএফের দেওয়া বিভিন্ন শর্ত ও সুপারিশের ওপর তিন দিনব্যাপী বিতর্ক শেষে আজ শুক্রবার বিকেলে প্রস্তাবটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যর ভোটে পাশ হয়।

আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়নের প্রস্তাবে ভোট দেয়নি শ্রীলঙ্কার কয়েকটি রাজনৈতিক দল

গত ২০ মার্চ আইএমএফ নির্বাহী পর্ষদ সংস্থাটির এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) আওতায় শ্রীলঙ্কার জন্য ঋণ ছাড়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে। ৪৮ মাস ধরে কয়েক কিস্তিতে শ্রীলঙ্কাকে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার ইএফএফ ঋণ দেবে আইএমএফ। এরইমধ্যে সংস্থাটি শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুকূলে প্রথম কিস্তির অর্থ ছাড় করেছে।

ইএফএফ তহবিল পেতে আইএমএফের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা সরকার যে বন্দোবস্ত করেছে, তাতে দুর্নীতি দমন, সরকারি ব্যয়ে স্বচ্ছতা, কৃচ্ছতা সাধনের মতো বেশকিছু কঠিন শর্ত রয়েছে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তৃতায় বলেছেন, নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যত বাজি রেখে হলেও তিনি আইএমএফের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করবেন।

গত বুধবার আইএমএফের ইএফএফ বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে বিশেষ বিতর্ক শুরু হয়। তিন দিনের বিতর্ক শেষে আজ অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে ১২০ জন সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে রায় দেন। ২৫ জন এমপি প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন।

শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দল সমাজি জন বলবিজ্ঞ (এসজেবি), তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (টিএনএ) ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার দল শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দুর্দশার জন্য অনেকের চোখে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের দল শ্রীলঙ্কা পোড়ুজনা পেরামুনা (এসএলপিপি) দলের সব এমপি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

এর আগে পার্লামেন্টে ব্কৃতায় প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে বলেছেন, ইএফএফ বাস্তবায়নের প্রস্তাব পার্লামেন্টে পাশ হলে আইএমএফের সঙ্গে সরকারের ঋণচুক্তির মূল বিষয়গুলো আইন হিসেবে বলবত করা হবে।

ইএফএফ বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন হলে শ্রীলঙ্কার জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক সংস্থা থেকে ৭০০ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ সংগ্রহের পথ খুলবে। গত মাসেই শ্রীলঙ্কা ইএফএফের প্রথম কিস্তির ৩৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার পেয়েছে। ইএফএফ সুপারিশ বাস্তবায়নের পথে এগোলে এডিবি ও বিশ্ব ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকেও ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।