জাপানের কাছে শ্রীলঙ্কার দুঃখপ্রকাশ

কলম্বো মেট্রোরেল প্রকল্প বাতিলের ঘটনায় জাপানের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছে শ্রীলঙ্কা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বিষয়টি নিয়ে তার দেশের অবস্থানের কথা জানান। কলম্বো লাইট রেল ট্রানজিট (এলআরটি) শীর্ষক প্রকল্পটি জাপানের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল।

টোকিওতে শ্রীলঙ্কা-জাপান দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

বৈঠকে রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, ভবিষ্যতে কলম্বো এলআরটির মতো বড় বাজেটের দ্বিপক্ষীয় প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে আরও প্রস্তুতি ও সতর্ক হওয়া জরুরি। এজন্য পার্লামেন্টে আইন পাশ হওয়া দরকার যাতে উভয় পক্ষের সম্মতি ছাড়া একতরফাভাবে এসব প্রকল্প বাতিল অথবা স্থগিত না করা যায়।

২০১৭ সালে রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী থাকাবস্থায় কলম্বো এলআরটি প্রকল্প উদ্বোধন হয়। জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১৫০ কোটি ডলার। তখন পর্যন্ত এটাই ছিল শ্রীলঙ্কায় বিদেশি অর্থায়নে সবচেয়ে বড় প্রকল্প।

২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিবর্তন হয়। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে একতরফাভাবে প্রকল্পটি বাতিল ঘোষণা করেন। কলম্বো অঞ্চলের যানজট সমস্যা নিরসনে এলআরটি প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় বলে রাজাপাকসে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

গতবছর ডিসেম্বরে রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর এলআরটি প্রকল্পটি আবার চালু করার চেষ্টার কথা জানান। এরপর মার্চ মাসে এক অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কায় জাপানের রাষ্ট্রদূত হিদেকি মিজোকুশি বলেন, এলআরটি প্রকল্প পুনরায় চালুর বিষয়ে জাপান এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। শ্রীলঙ্কা সরকার জাপানের আস্থা অর্জনে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে পারে কিনা টোকিও তা পর্যবেক্ষণ করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

চলতি মাসে আরও আগের দিকে ইউরেশিয়া বিভিউতে জাপানি সূত্রের বরাতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপান সরকার কলম্বো এলআরটি প্রকল্পকে অর্থপূর্ণ মনে করে। তবে প্রকল্পটি পুনরুজ্জীবিত করতে জাপানের কিছু শর্ত রয়েছে। সবার আগে শ্রীলঙ্কাকে বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে হবে। শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক ঋণ পুনর্গঠন সম্পন্ন করতে হবে এবং ঋণ পুনর্গঠনের চীনের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে হবে।

গতকাল টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এলআরটি বাতিলের জন্য আনুষ্ঠানিক দুঃখপ্রকাশের পাশাপাশি রনিল বিক্রমাসিংহে তার দেশের অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে সহায়তার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান।

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জাপানের কাছে দুঃখপ্রকাশের কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। দুই নেতার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ কথোপকথনের পর উভয় দেশের কর্মকর্তারা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শুরু করেন।