শেষ হলো নয়াদিল্লির জি-২০ সম্মেলন, আগামী সম্মেলন ব্রাজিলে

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১০ সেপ্টেম্বর, রোববার নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন। তিনি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী সম্মেলনের সভাপতিত্ব হস্তান্তরের প্রতীক একটি হাতুড়ি তুলে দেন। ২০২৪ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে ১৯তম জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী সম্মেলনের সভাপতিত্ব হস্তান্তরের প্রতীক একটি হাতুড়ি তুলে দেন

রোববার সমাপনী অনুষ্ঠানে মোদি বলেছেন, ‘আমি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট এবং আমার বন্ধু লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। আমি তার হাতে পরবর্তী সম্মেলনের সভাপতির হাতুড়ি হস্তান্তর করতে চাই।' 

এদিকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চলমান কূটনৈতিক বিবাদের মধ্যে জি-২০ সম্মেলনে আলোচনার জন্য নির্ধারিত এজেন্ডা বাদ দেওয়া উচিত হবে না। 

তিনি বলেছেন, ‘আমরা ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুগুলোর কারণে জি-২০ সম্মেলনের আলোচনার এজেন্ডাকে আলাদা করতে দিতে পারি না। আমাদের একটি বিভক্ত জি-২০তে কোনো আগ্রহ নেই। সংঘাতের পরিবর্তে আমাদের শান্তি ও সহযোগিতা প্রয়োজন।' 

লুলা জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আগামী বছরের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তিনি রিও ডি জেনিরোর বৈঠকে যোগ দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত মার্চ মাসে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইউক্রেন থেকে শত শত শিশুকে অবৈধভাবে রাশিয়ায় নির্বাসনের জন্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক সমাবেশ এড়িয়ে গেছেন পুতিন। ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকে পাঠিয়েছেন। 

দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনের সময়, জি-২০ তে একটি ঐকমত্য ঘোষণা গৃহীত হয়েছে। এতে খাদ্য, জ্বালানি নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক ঋণ দুর্বলতার মতো বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। 

৯ সেপ্টেম্বর, শনিবার জি-২০ সম্মেলনে একটি ঐকমত্য ঘোষণা গৃহীত হয়েছিল। এতে ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার নিন্দা করা হয়নি। তবে অন্য দেশের অঞ্চল দখলের জন্য বিশ্বের সকল দেশকে শক্তি ব্যবহার না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর, রোববার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ এটিকে একটি কূটনৈতিক বিজয় বলে দাবি করেছেন।  

দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনের সাইড লাইনে একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তার মিশরীয় প্রতিপক্ষ আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগের দিন ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

তবে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি হবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে। এটি ১১ সেপ্টেম্বর, সোমবার অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ৯ সেপ্টেম্বর, শনিবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিশ্বের ২০টি প্রধান অর্থনৈতিক দেশগুলোর জোট জি-২০ এর ১৮তম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১০ সেপ্টেম্বর, রোববার দুই দিনের এই সম্মেলন শেষ হয়। এতে এরদোয়ান, বাইডেন, ম্যাক্রন, মোহাম্মদ বিন সালমানের মতো বিশ্বনেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: দ্য ন্যাশনাল