চাঁদের বুকে মাথা উঁচু করেছে জাপানের মুন স্নাইপার

চাঁদের মাটিতে নাকে খত দিয়ে অর্থাৎ, মুখ থুবড়ে উল্টে পড়েছিল জাপানের মুন স্নাইপারখ্যাত চন্দ্রযান স্লিম (স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন)। গত ১৯ জানুয়ারি এ ঘটনার দশদিনের মাথায় জাপানের মহাকাশ সংস্থা জাক্সা জানিয়েছে, ল্যান্ডারটি ফের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, কাজ শুরু করেছে নিজের। খবর বিবিসির।

চাঁদের বুকে মুখ থুবড়ে পড়েছিল জাপানের মুন স্নাইপার

জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জাক্সা) সোমবার জানিয়েছে, চন্দ্রযান স্লিমের রোভার এলইভি-১ (লুনার এক্সকারশন ভেহিকল) কাজ শুরু করেছে।

চাঁদের পৃষ্ঠের নিরক্ষীয় অঞ্চল শিউলি কার্টারে অবতরণ করেছে জাপানের চন্দ্রযান স্লিম। আশপাশে প্রচুর পাথর ছড়ানো-ছিটানো।

মহাকাশযানটি গত ১৯ জানুয়ারি চাঁদের পূর্বনির্ধারিত ওই অঞ্চলে অবতরণ করলেও বিজ্ঞানীরা দেখতে পাচ্ছিলেন, স্লিমের সৌর প্যানেল কাজ করছে না। তার মানে, কিছুক্ষণের মধ্যে চার্জ ফুরিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে সেটি।

বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নিলেন, চন্দ্রযানটিকে স্লিপ মোডে পাঠিয়ে দিতে হবে। তার আগে ওই চন্দ্রযানে যুক্ত দুটি ছোট রোভার বাইরে নিয়ে আসতে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা। রোভার দুটি হচ্ছে, এলইভি-১ ((লুনার এক্সকারশন ভেহিকল) এবং এলইভি-২ (সোরা-কিউ)।

সোরা-কিউ একটি বেসবলের মতো রোভার, যার গায়ে লাগানো রয়েছে ক্যামেরা। বিজ্ঞানীরা স্লিমকে স্লিপ মোডে পাঠানোর এই ক্যামেরা স্লিম ও তার অবতরণস্থলের ছবি তুলে এবং সেটি এলইভি-১ এর মাধ্যমে মিশনের কন্ট্রোল রুমে পাঠাতে সক্ষম হয়।

ছবি পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, স্লিম চাঁদের মাটিতে উল্টো হয়ে পড়েছে। তাতে সৌর প্যানেল পশ্চিম দিকে হেলে রয়েছে এবং সেজন্যই স্লিমে চার্জ হচ্ছে না।

বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছিলেন, আকাশে সূর্যের অবস্থান বদল ঘটলে অর্থাৎ, চাঁদে যখন দিন শুরু হবে, তখন উল্টে পড়া স্লিমের সৌর প্যানেল সূর্যালোক পেয়ে পাবে। তখন স্লিমে চার্জ হবে এবং মিশন ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই।

অবশেষে তাই হয়েছে, সূর্যালোকের দিকের পরিবর্তন স্লিমকে জাগিয়েছে, জাপানের মুন ল্যান্ডার ফের সক্রীয় হয়েছে।

জাক্সা জানিয়েছে, রবিবার রাতে ল্যান্ডারটি সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন হয়েছে। যে ত্রুটি ছিল, সেটি ঠিক করা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারতের পর জাপান হচ্ছে চন্দ্রাভিযানে যাওয়া পঞ্চম দেশ।