রাশিয়াকে জেলেনস্কি: ইউক্রেন দ্বিতীয় আফগানিস্তান হবে না

সম্প্রতি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে দীর্ঘ বিলম্বের পর ইউক্রেনের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলার সাহায্য বরাদ্দ করার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এই সিদ্ধান্তটি প্রমাণ করে যে ইউক্রেন দ্বিতীয় আফগানিস্তানে পরিণত হবে না। জেলেনস্কি মার্কিন টিভি চ্যানেল এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া একটি সাক্ষাতকারে এই কথা বলেছেন।

ভলোদিমির জেলেনস্কি

২১ এপ্রিল, রোববার মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘এই সাহায্য ইউক্রেনকে শক্তিশালী করবে এবং ক্রেমলিনকে একটি শক্তিশালী সংকেত পাঠাবে যে এটি দ্বিতীয় আফগানিস্তান হবে না। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে থাকবে, ইউক্রেনীয়দের রক্ষা করবে এবং তারা বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র রক্ষা করবে।' 

সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে আক্রমণ করেছিল। ফলে একটি শীতল যুদ্ধের শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র আফগান মুজাহিদীনদের অস্ত্র এবং অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছিল। আফগান যোদ্ধারা এক দশক পরে রাশিয়ান বাহিনীকে নিজ দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল।  

রাশিয়ান বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর কট্টরপন্থী তালেবানরা ক্ষমতা গ্রহণ করে। তারা ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশটির বেশিরভাগ অংশ শাসন করে। 

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে হামলার সঙ্গে জড়িত আল কায়েদা গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী আফগানিস্তানে হামলা করে তালেবানদের দেশটির ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে।

প্রায় ২০ বছর ধরে তালেবানদের সঙ্গে লড়াই করার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও অবশেষে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে বিধ্বস্ত আফগান বাহিনীকে পরাস্ত করে ২০২১ সালের আগস্টে তালেবানরা পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করতে কাবুলে ফিরে আসে।

জেলেনস্কি বলেছেন, 'আমাদের নিজেদের কিছু বাহিনীও ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আমাদেরকে তাদের প্রতিস্থাপন করতে হবে। এই নতুন ব্রিগেডের জন্য সরঞ্জাম দরকার হবে। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জিনিসগুলো পেতে চাই, যাতে আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্রন্টলাইনে সৈন্যদের জন্য কিছু বাস্তব সহায়তা দিতে পারি।' 

উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রধান সামরিক সমর্থক ছিল। কিন্তু প্রায় দেড় বছর ধরে কংগ্রেস তার মিত্রের জন্য বড় আকারের তহবিল অনুমোদন করেনি। অবশেষে কয়েক মাসের দীর্ঘ আলোচনা, মার্কিন মিত্রদের চাপ এবং জেলেনস্কির সহায়তার জন্য বারবার অনুরোধের পর ২০ এপ্রিল, শনিবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে ইউক্রেনকে সাহায্য করার বিল পাস হয়।

সূত্র: এএফপি