চাঁদের দূরবর্তী পৃষ্ঠে যাচ্ছে চীনের নভোযান চ্যাং’ই-৬

চাঁদের দূরবর্তী পৃষ্ঠ থেকে পাথর-মাটির নমুনা সংগ্রহের জন্য ক্রুবিহীন নভোযান পাঠিয়েছে চীন। নভোযানটির নাম চ্যাং’ই-৬। পৃথিবী থেকে চাঁদের উল্টো পিঠে অভিযানে বিশ্বে এই প্রথম রকেট পাঠালো দেশটি। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

চ্যাং’ই-৬ নামে ক্রুবিহীন নভোযান চাঁদে পাঠিয়েছে চীন

চীনা মহাকাশ গবেষণা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাইনান প্রদেশের ওয়েনচাং স্পেস উৎক্ষেপণ সেন্টার থেকে বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা ৫ টা ২৭ মিনিটে (জিএমটি ৯:২৭) মনুষ্যবিহীন চন্দ্রযান চ্যাং-ই-৬ উৎক্ষেপণ করা হয়। লং মার্চ-৫ রকেট ৮ টন ওজনের নভোযান চ্যাং-ই-৬ কে মহাকাশে নিয়ে যায়।

চীনা মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানান, চাঁদের দূরবর্তী অংশ থেকে পাথর ও মাটির কিছু নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসতেই চীনের নতুন এই অভিযান। ৫৩ দিন অর্থাৎ, প্রায় দুই মাসের মিশনে এই চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ করেছে চীন।

চীনা গবেষকরা বলছেন, মিশনের লক্ষ্য বিশ্লেষণের জন্য প্রায় দুই কিলোগ্রাম চন্দ্রের পাথর-মাটির নমুনা পৃথিবীতে আনা। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এমন উপাদান সংগ্রহের মাধ্যমে চাঁদ কীভাবে গঠিত হয়েছিল, সেটি সহজেই বের করা যাবে।

চন্দ্রযানটি নামবে পৃথিবী থেকে চাঁদের উল্টো পিঠে অর্থাৎ, চাঁদের দূরবর্তী পৃষ্ঠের দক্ষিণ মেরু হিসেবে পরিচিত আইটকেন বেসিনে। আমরা যেটিকে চাঁদের অন্ধকার দিক বলি, কারণ পৃথিবী থেকে চাঁদের ওই পাশ কখনো দেখা যায় না, কেননা, ওই দিকে সূর্যের রশ্মি পৌঁছায় না।

আড়াই হাজার কিলোমিটার চওড়া এবং আট কিলোমিটার গভীর আইটকেন বেসিন থেকেই ২ কিলোগ্রাম নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরে আসবে চীনা চন্দ্রযান।

চীনের লুনার এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টারের ডেপুটি পরিচালত জি পিং রকেটটি উৎক্ষেপণের আগে সাংবাদিকদের বলেন, চাং'ই-৬ বিশ্বে প্রথমবারের মতো চাঁদের দূরপৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, চন্দ্রযানটি রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগবে। জুনের প্রথম দিকে সেটি চাঁদে অবতরণ করতে পারে। নভোযানটি ঠিকঠাক চাঁদে নামতে পারলে দুই দিনে খুঁড়ে তুলবে ২ কেজি পাথর-মাটি। তারপর ফিরে আসবে পৃথিবীতে। চন্দ্রযানটি ফিরে এসে চীনের ইনার মঙ্গোলিয়ায় অবতরণ করার কথা।