ম্যাথিউ ব্রাইসের বয়স ২৩ বছর। শখের সার্ফার তিনি। রোববার সকালে তিনি সার্ফিং করতে গিয়েছিলেন ব্রিটেনের উপকূলে। নিজের গাড়ি চালিয়ে গিয়ে সার্ফিং বোর্ড নিয়ে তিনি নেমে যান সাগরে। তখন ব্রাইসের জানারই সুযোগ ছিলো না যে, তার এবারেই হয়তো শেষবার সাগরে নামছেন তিনি। যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই তার সেই উপলব্ধিটা তৈরি হয় এবং ৩২ ঘণ্টা খুব কাছ থেকে মৃত্যুকে দেখে ভাগ্যগুণে আবার ফিরেও আসেন ব্রাইস।

mathew brise story maker in the sea

ব্রাইস সার্ফিং বোর্ড নিয়ে প্রথমে ভালোই দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। নিজের সার্ফিং দক্ষতার নানা কৌশল ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই উত্তাল হয়ে উঠে সাগর। ঝড়ো বাতাস এবং পাহাড়ের সমান সব ঢেউয়ের সামনে তাল হারিয়ে গভীর সাগরের দিকে ভেসে যেতে থাকেন ব্রাইস।

সকাল থেকে দুপুর এবং বিকেল গড়িয়ে আসা পর্যন্ত সাগরের গভীর থেকে গভীরে যেতে থাকেন তিনি। ততক্ষণে তার আশপাশে কোনো মানুষ নেই। মানুষের চিহ্নও নেই। ব্রাইসের চোখ যে দিকে যাচ্ছিলো, সে দিকেই শুধু পানি আর পানি। এই পরিস্থিতিতে কে তাকে উদ্ধার করবে— এমন প্রশ্ন জেগেছিলো ব্রাইসের মনে এবং তিনি নিজেকে বোঝাচ্ছিলেন যে, তার আর বাঁচার আশা নেই। এই সাগরেই তার সলীল সমাধি ঘটবে।

এ দিকে ব্রাইসের বাবা- মা তার খোঁজে ততক্ষণে পাগল প্রায়। স্পিড বোট এবং হেলিকপ্টার দিয়ে খোঁজাখুঁজির ব্যবস্থা করে ফেলেছেন তারা। কিন্তু ব্রাইসের কোনো খোঁজ আসছিলো না। সন্তানকে জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন তারাও।

সন্ধ্যা নেমে আসার সময়ে ব্রাইসের কাছাকাছি দূরত্ব দিয়ে চলে গেছে একাধিক জাহাজ। কিন্তু তার ক্ষীণ হয়ে আসা কণ্ঠস্বর পৌঁছায়নি জাহাজবাসীদের কাছে। এ ছাড়া জাহাজের যান্ত্রিক শব্দেও মিলিয়ে গেছে ব্রাইসের প্রাণ বাঁচানোর একেকটা আকুতি- চিৎকার।

ধীরে ধীরে রাত নামতে শুরু করলে বাঁচার শেষ আশাটাও হারিয়ে ফেলেন ব্রাইস। তার মন বিবশ হয়ে আসে। শরীরে ভর করে ক্লান্তি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্রোত, ঢেউ আর বাতাসের তোড়ের বিপরীতে হাত পা ঝাপিয়ে কোনো লাভই হয়নি তার। একটা সময় শরীরটা টেনেটুনে সার্ফিং বোর্ডে রেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ব্রাইস।

অবিশ্বাস্য ঘটনাটা ঘটে পরদিন সকালে। ভোরের আলো ফুটতেই তার ঠিক উপরে একটি হেলিকপ্টার উড়তে দেখলেন ব্রাইস। তার দেহমনে ভর করলো শেষ শক্তিটুকু। সার্ফিং বোর্ড থেকে হাত নাড়িয়ে হেলিকপ্টারে থাকা লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলেন তিনি। কিন্তু তার জায়গা থেকে কপ্টারটি তখন ওড়ে চলে যাচ্ছিলো। কয়েক মুহূর্ত পর বাঁক বদল করে তার দিকে আসে হেলিকপ্টারটি। এরপর ৩২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য লড়াই শেষে উদ্ধার হন ব্রাইস।

তাকে সরাসরি ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানে ডেকে আনা হয় ব্রাইসের বাবা- মাকে। যারা সন্তানের ফিরে আসার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন। দুদিনের টানা চিকিৎসায় স্বাভাবিক হন ব্রাইস। সুস্থ হওয়ার পর ব্রাইস জানান, তিনি আর কখনোই সার্ফিং করতে চান না।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.